শৈলকুপার আলোচিত লিপটন নিখোঁজ মামলার প্রতিবেদন প্রকাশ : উদ্ধার হয়নি ভিকটিম
জেলাবাসী নিখোঁজ লিপটনের প্রকৃত সত্য জানতে চায়, কোন দায়সারা তদন্ত প্রতিবেদন নয় !
নিজস্ব প্রতিদেক, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপার ট্রাক ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলাম লিপটন (২৬) কে ইটভাটায় পুড়িয়ে হত্যা করা হতে পারে বলে অনুমান নির্ভর তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন ঝিনাইদহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই)। নিখোঁজ লিপটনের মামলা তদন্তে বলা হয়েছে তানিয়ার বিরুদ্ধে লিপটন অপহরণের কোন সাক্ষি প্রমান না পাওয়া গেলেও পারিপার্শ্বিক অবস্থাদৃষ্টে বিবাদী শারমিন আক্তার তানিয়াসহ অন্যান্য অপারাধীগন ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে। তাই জিআর মামলা রুজু করে তানিয়াসহ অন্যান্যদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার বলে আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে ঝিনাইদহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশন (পিবিআই) এর এসআই গাবুর আলী সরদার তার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। একটি গুরুত্বপূর্ণ স্পর্শকাতর মামলা তদন্তে পারিপার্শ্বিক অবস্থাদৃষ্টে অনুমান নির্ভর দায়সারা গোছের প্রতিবেদন দাখিল করায় হতাশ জেলাবাসী। জানা গেছে, গত ৪ জানুয়ারী/১৮ শৈলকুপার হাবিবপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম লিপটন নিখোঁজ হওয়ার পর দায়িত্বশীল অনেক পত্র-পত্রিকা ফলাও করে খবর প্রকাশ করে। ঝিনাইদহ পিবিআইর এসআই গাবুর আলী সরদার একাধিক সাক্ষির সাক্ষ্য শেষে আদালতে তার মতামত উপস্থাপন করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, মামলার আসামী শৈলকুপা বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শারমিন আক্তার তানিয়া শৈলকুপার কাজী পাড়ার মৃত আশরাফুল আলমের স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ের সাথে নিখোঁজ লিপটনের পরকীয়া ছিল। সেই সুত্র ধরে লিপটন তানিয়ার বাড়িতে যাতায়াত করতো। নিখোঁজ হওয়ার পর তানিয়া তার ইটভাটার সরদার নজরুল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তির সাথ মোবাইলে কথা বলার বিষয়টি পিবিআই রহস্যজনক চোখে দেখছে। লিপটন নিখোঁজ হওয়ার আগে পরে তানিয়ার সাথে একাধিক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে কথা বলেছে। সচেতন মহলের জিজ্ঞাসা তদন্ত কর্মকর্তা গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলার প্রকৃত সত্য উদঘাটন না করেই অনুমান নির্ভর প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। শৈলকুপার বীর মুক্তিযোদ্ধা কন্যা শারমিন আক্তার তানিয়া শিক্ষকতার পাশাপাশি ইটভাটাসহ একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখাশোনা করেন। সে কারনে তার সাথে অনেকেরই নিয়মিত কর্তাবার্তা হয় বা হতেই পারে। কাকতালীয়ভাবে ঘটনার দিন যারা কথা বলেছে তাদেরকে তদন্ত কর্মকর্তা অযাচিতভাবে সন্দেহের আওতায় আনতে চেষ্টা করছেন বলে অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়। লিপটন নিখোঁজের কদিন আগে শৈলকুপা চৌরাস্তা মোড়ে অবস্থিত শারমিন আক্তার তানিয়ার নামীয় পাকা বাড়ি দখলকে কেন্দ্র করে তুমুল হৈচৈ পড়ে শৈলকুপা জুড়ে। নানা বিতর্কের জন্ম নেয়া মামলা মোকর্দ্দমা চলমান সংক্রান্ত ওই বাড়ি নিয়ে তানিয়ার সাথে মাঠপাড়া গ্রামের সদর উদ্দিনের ছেলে ক্লিনিক ব্যবসায়ী শাহীন আক্তার পলাশের ব্যাপক বিরোধ চলছিল। এ সংক্রান্ত বিষয়ে শারমিন আক্তার তানিয়া পলাশের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ আদালতে একটি মামলা করে ও বর্তমানে উক্ত মামলায় পলাশ জামিনে আছে। জেলার গোটা প্রশাসন বিষয়টি অবগত উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে সে সময় স্যোসাল মিডিয়ায় নানা খবর প্রচারিত হয়। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সাংবাদিক পুলিশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনেকেই সেসময় শারমিন আক্তার তানিয়া, শাহীন আক্তার পলাশ শৈলকুপা থানার ওসি এবং জেলা পুলিশের সাথে কথা বলেন। ফলে তানিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলা মানেই তারা অভিযুক্ত হবেন বিষয়টি আপত্তিকর বলে দাবি করেছেন জেলার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। শৈলকুপাসহ জেলাবাসী লিপটন নিখোঁজ হওয়ার মামলায় প্রকৃত সত্য উদঘাটন না হওয়ায় ব্যাপক হতাশ হয়েছেন। লিপটনের পিতা আব্দুল খালেকের দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত তানিয়ার সাথে তার সাবেক স্বামী শাহীন আক্তার পলাশের একাধিক মামলা মোকর্দ্দমা চলমান রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, শাহিন আক্তার পলাশ নিজের স্বার্থ হাসিল করতে লিপটনের পিতাকে ম্যানেজ করে পলাশের সাথে বিবাদমান দুই একজনকে ফাঁসানোর মহা কৌশলী ফাঁদ পেতেছে। পলাশের বিরুদ্ধে দায়ের করা তানিয়ার মামলার জের ধরেই লিপটন নিখোঁজের মত একটি স্পর্শকাতর মামলায় অন্যদেরকে ফাঁসানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও শৈলকুপায় কর্মরত দায়িত্বশীল সাংবাদিকগণ ও একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে। শৈলকুপাসহ জেলাবাসী নিখোঁজ লিপটনের প্রকৃত সত্য জানতে চায়, কোন দায়সারা তদন্ত প্রতিবেদন নয়। আরো উল্লেখ্য, শৈলকুপার কথিত ট্রাক ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলাম লিপটন একসময় ছাত্রদলের ক্যাডার ছিল এবং তার বিরুদ্ধে শৈলকুপা থানায় বিভিন্ন প্রকার ৮টি মামলা চলমান রয়েছে।