রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫
রবিবার, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫

ঝিনাইদহে মহেশপুরে আবারও ভুল অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক:

ঝিনাইদহে আবারও মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলো এক মা। ভুল সিজার অপারেশনের কারণে রিনা খাতুন (৩২) নামের এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ঝিনাইদহের মহেশপুরের শুভ ক্লিনিক অ্যান্ড প্রাইভেট হাসপাতালে সিজার অপারেশন করার সময় অপারেশন টেবিলেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত রিনা খাতুন মহেশপুর উপজেলার হাবাশপুর স্কুলপাড়ার সামাউল ইসলামের স্ত্রী। এদিকে ঘটনার পরপরই ক্লিনিক মালিক সুভাষ কুমার তার সহযোগীদের নিয়ে রোগীর স্বজনদের সাথে দফা রফায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মৃত রিনা খাতুনের স্বামী সামাউল ইসলাম জানান, ক্লিনিক মালিক আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলেছে। আমি তার বিচার চাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাতিবিলা গ্রামের কয়েকজন জানান, ভাড়া করা ডাক্তার সোহেল রানাকে দিয়ে শুভ ক্লিনিকের মালিক সুভাষ কুমার প্রায় দিনে ও রাতে বিভিন্ন ধরণের অপারেশন করে আসছিলো। তারা আরও জানান, শুভ ক্লিনিক এণ্ড প্রাইভেট হাসপাতালের ঝাড়ুদার নার্সের দায়ীত্বে থাকে আর সুইপার কাজ করে আয়ার। যে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে ঝাড়ুদার হয়ে যায় নার্স, সুইপার হয় আয়া আর অপারেশন করে নেশাগ্রস্থ ডাক্তার সে প্রতিষ্ঠানে রোগী মারা যাবেই।

এদিকে, মাত্র আট দিন আগে নেপামোড়ের মা ও শিশু ক্লিনিক ও একই এলাকার একতা ক্লিনিকে ভুল সিজার অপারেশন করার সময় ডাক্তার সোহেল রানার হাতে সীমান্ত এলাকার জিনজিরা পাড়ার মরিয়ম খাতুন ও লাবনি নামের দুই প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়। একের পর এক প্রসূতি মায়েদের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা চুপ করে বসে আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডাক্তার আনঞ্জুমানআরা খাতুন বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাশ্বতী শীল জানান, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আর এ সব ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, আমি খুব দ্রুত ক্লিনিকগুলোতে অভিযান চালাব।’

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ইতিপূর্বের ন্যাপা মোড়ের দুইটা ক্লিনিকের রুগি মৃত্যুর তদন্তে রিপোর্ট দেরিতে আসায় ব্যবস্থা নিতে দেরি হল। তবে আজই মহেশপুরের মা ও শিশু হাসপাতাল ও একতা প্রা: হাসপাতাল কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়ে চিঠি করা হচ্চে এবং আজই ক্লিনিক মালিকদের হাতে তা পৌঁছে দেওয়া হবে।

এদিকে, আট দিনের মধ্যে তিনটি প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাবাসী ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে বলছে মহেশপুরের ১৮টি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কোনো ডাক্তার নার্স না থাকলেও তাদের সিভিল সার্জন প্রসূতি হত্যার লাইসেন্স দিয়েছে। যার কারণে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটলেও তিনি ক্লিনিক মালিকদের দায় মুক্তির সার্টিফিকেট দিয়ে যাচ্ছেন।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular