স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে কৃষিতে নারী কৃষকের স্বীকৃতির জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন করেছে উন্নয়ন ধারার সহযোগিতায় গড়ে উঠা ঝিনাইদহের স্বাধীন কৃষক সংগঠন। গ্রামীন পর্যায়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরার জন্য স্বাধীন কৃষক সংগঠন ও উন্নয়ন ধারার আয়োজনে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ভাটই বাজার, হাটফাজিলপুর বাজার ও সদরের কুলবাড়িয়া গ্রামের তিনটি এলাকায় ২৪০ জন নারী ও ৭০ জন পুরুষ কৃষকসহ মোট ৩১০ জন কৃষক ও কৃষাণীর সমন্বয়ে বর্ণাঢ্য র্যালি বাজার ও গ্রাম প্রদক্ষিণ শেষে আলোচনা সভার আয়োজন করে এবং যা থেকে উক্ত দাবি জানানো হয়।
কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র দুরীকরণের ক্ষেত্রে গ্রামীণ নারীদের ভুমিকা অনস্বীকার্য। পৃথিবীর দেশগুলো বিবেচনা করলে দেখা যায় সেই দেশ তত বেশি উন্নত যে দেশের নারীরা যত বেশি সচেতন ও কর্মঠ। অবশ্য বাংলাদেশেও পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, নারীদের গৃহাশ্রম লুকায়িত অর্থনীতিকে সামনে এনে দেখিয়ে দিয়েছে কি করে জনসংখ্যার বিরাট অংশ তাদের শ্রমের উপর নির্ভর করে টিকে আছে। নারীদের অবদানকে স্বীকৃতি ও মর্যাদা দান এবং তাদের ভিতর আরও উদ্দীপনা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতি বছর এ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হচ্ছে। অদ্যাবধি কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত।
বিশেষত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষিখাতের স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। এই খাতে কর্মরতদের অর্ধেকের বেশি নারী এবং এ সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গৃহস্থালীর সকল কাজের পাশাপাশি গরু-ছাগল-হাস-মুরগী-কবুতর পালন, বসতভিটায় শাক-সব্জি ও ফলমূল উৎপাদন, বীজ সংরক্ষণ, শস্য মাড়াই ও মাড়াই পরবর্তী কার্যক্রম, খাদ্যশস্য প্রক্রিয়াজাতকরণসহ কৃষিপণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে পরিবারের খাবার টেবিল বা বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বেশিরভাগ কাজই নারীরা করে থাকেন।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এসব কাজের বিনিময়ে অর্থলাভ তো দূরের কথা পরিবার থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত কোথাও নারীর কাজের কোন স্বীকৃতি নেই। কারণ, কৃষক হিসেবে নারীরা আজও স্বীকৃত নয়। তাই রাষ্ট্রীয় নানা উদ্যোগ-আয়োজনে এখনো নারী কৃষকদের যথাযথ মূল্যায়ন নেই। সরকার বা নীতিনির্ধারকরা জাতীয় অর্থনীতির সমৃদ্ধিতে বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করলেও সেখানে নারী কৃষকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ থাকছে উপেক্ষিত। নারী কৃষকের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির ফলেই মিলবে ক্ষুধা ও দারিদ্র থেকে নিষ্কৃতি, বইবে সামষ্টিক উন্নয়নের জোয়ার।