বড় বড় সাংবাদিকরাও আমার পরিচিত। লিখে আর কি করবেন?
ঝিনাইদহ সংবাদদাতাঃ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজারে খাদ্য গুদাম (গোডাউন) নির্মাণ কাজে শুভংকরের ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। বাজারের হাইওয়ে থানার পাশে দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠাত খাদ্য গুদাম নির্মাণে নিন্মমানের ইট, বালি, খোয়া, সিমেন্ট ও রড ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্মান কাজ নিন্ম মানের হওয়ায় এলাকাবাসী ঈদের আগে অভিযোগ দিলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। পরে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ঠিকাদার মিজানুর রহমান পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে মাটি খুঁড়ে নীচ থেকে ভীত ঢালায়ের কাজ করছেন। প্রাপ্ত তথ্যে জানাগেছে, বারবাজার খাদ্য গুদাম নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেখানে নতুন একটি গুদাম নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়। গণপূর্ত বিভাগের দেড় কোটি টাকা অর্থায়নে ওই কাজটি পান ঝিনাইদহের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
সম্প্রতি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইস্টিমেট এর নিয়ম কানুন না মেতে ইচ্ছামত মাটি মিশ্রিত বালি, নিন্মমানের ইট, খোয়া ও রড দিয়ে কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে মাটি খুড়ে নীচ থেকে ভীত এর কাজ করেছে। সেখানে নিন্ম মানের ইট খোয়া,মাটি মিশ্রিত বালি, রড ও সিমেন্ট ব্যবহার করে ভীত এর কাজ শুরু করেছে। নিন্ম মানের কাজ দেখে এলাকাবাসী মন্তব্য করেন, ‘আগের গুদাম টি ২০/২৫ বছর ধরে ব্যবহার করা গেছে, বর্তমানে ঠিকাদার যেভাবে কাজ করছেন তাতে ওই গুদাম ৫ বছরের বেশি সময় টিকবে না’। তারা এ ঘটনায় অভিযোগ দিলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাদেকুর রহমান সেই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। পরে ঠিকাদারের ভাই মিজানুর রহমান লাড্ডু ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, বীম তৈরিতে মোটা রডের সাথে চিকন রড দিয়ে গাথা হয়েছে। দেওয়া হচ্ছে নিন্ম মানের ইটের খোয়া ও মাটি মিশ্রিত বালি।এলাকাবাসীর অভিযোগ নির্মাণ কাজ শুরু করতে হলে, ইস্টিমেট অনুযায়ি সিটিজেন চার্টার টানাতে হয়। সেখানে মোট নির্মাণ ব্যয়, রডের মিলি গ্রাম, সিমেন্টের নাম, ইট ও খোয়া ও বালির গ্রেড উল্লেখ থাকবে। কিন্তু সেখানে কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কিছুই উল্লেখ করেননি। এ ব্যাপারে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারকে না পাওয়া গেলেও তার ভাই মিজানুর রহমান লাড্ডু বলেন, বুঝেন তো উপরের লেভেল থেকে আসতে হয়। এজন্য কাজও একটু হেরফের হয়। তাছাড়া সরকারি কাজে একটু ১৫/২০ হবেই। এসব কথা বলে তিনি স্থানীয় এক সাংবাদিকের হাতে একহাজার টাকা গুজে দিতে যেয়ে বলেন, বড় বড় সাংবাদিকরাও আমার পরিচিত। লিখে আর কি করবেন?
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাদেকুর রহমান জানান, যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গোডাউন বা গুদাম নির্মাণ করছেন তারা আমার সাথে যোগাযোগ করেননি। এমনকি খাদ্য গুদামের কর্মকর্তাদের সাথেও যোগাযোগ করেনি। ঈদের আগে আমি অভিযোগ পেয়ে কাজ বন্ধ করে এসেছিলাম। সেখানে পরিদর্শনে যেয়ে কাজের মান ভাল মনে হয়নি। ঠিকাদারকে ইস্টিমেট নিয়ে তিনার সাথে যোগাযোগ করতে বলেছেন। সেই নির্দেশ অমান্য করে কেউ কাজ করতে আসলে ‘সরকারি নির্দেশ অমান্যের দায়ে জেল দেয়া হবে’।