রিপোর্ট: ইমাম বিমান: ঝালকাঠিতে বাসন্ডা ইউনিয়নের আগরবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী লিজা আক্তারের (০৯) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ ধারনা করছে। শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁজানো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে স্বজনরা লিজার লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে বলে জানায়। এসময় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিজাকে মৃত ঘোষনা করে বলেন, ‘হাসপাতালে আনার অনেক আগেই’ লিজার মৃত হয়েছে। বিষয়টি ঝালকাঠি থানা পুলিশ খবর পেয়ে নিহত লিজা আক্তার’র (০৯) লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল মর্গে এনেছে। এ ঘটনায় ঝালকাঠি সদর থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হলেও স্কুলছাত্রীর লিজার মৃত্যুর ঘটনা রহস্যেঘেরা বলে পুলিশ ধারণা করছে। নিহত লিজা আক্তার বাসন্ডা ইউনিয়নের আগরবাড়ি গ্রামের জাহাঙ্গীর মৃধার মেয়ে ও আগরবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রী।
এ বিষয় ঝালকাঠি থানার এসআই মো. দেলোয়ার জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের একটি বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে তার মায়ের সাথে কাজ করতে গিয়েছিল লিজা। রাত ১১ টায় সেখান থেকে একাই বাড়ি ফিরে আসার প্রায় দু’ঘন্টা পর তার বাক প্রতিবন্ধী বড় বোন নাছরিন ঘরে ফিরে এসে লিজাকে ঘরে আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে ডাক-চিৎকার শুরু করেন। এ সময় বাড়ির পাশের লোকজন এসে লিজার দেহ ঝুলন্ত দেখতে পেয়ে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে।
নিহত লিজার মা সেলিনা বেগম বলেন, রাতেই খবর পেয়ে বাড়িতে এসে আমি আমার মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে প্রতিবেশীদের সহায়তায় সেখান থেকে লিজাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার বলে বাড়িতে নিয়ে যান ওআর নেই। কিভাবে আমার মেয়ে মারা গেল বুঝিনি, এভাবে আমার মেয়ে মারতে পারে না। আমার স্বামী জাহাঙ্গির মৃধা কাজের তাগিদে ঢাকায় থাকে, এখন আমি তাকে কি বলবো বলে আহাজারি করে।
লিজার মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে আসা ভ্যান চালক স্বপন মিয়া জানান, আমি খবর পেয়ে যখন লিজার মৃতদেহ আনতে যাই তখন স্থানীয়দের মুখে শুনতে পাই লিজাকে ধর্ষন করা হয়েছে। গ্রামের গৃহবধু মাহমুদা বেগম বলেন, বৃহস্পবিার রাত ১১ লিজা তার বাক প্রতিবন্ধী বড় বোন নাসরিন ও তার মা সেলিনাকে বিয়ে বাড়ির পাকের ঘরে কাজ করতে দেখেছি। এরপর সকালে শুনতে পাই ঘরের ভিতরে লিজার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে। হাসপাতালে লিজার মৃতদেহের সাথে থাকা নিকট আত্মিয় রোকেয়া বেগম বলেন, আমাদের সন্দেহ এলাকার কোন বখাটে ছেলেরা ধর্ষন করে ঘটনা আড়াল করতে এ ঘটনা ঘটাতে পারে। কারন লিজার দুই কাঁধে কালো দাগ দেখেছি। কিন্তু কে বা কারা এঘটনা ঘটাতে পারে সেটাই অনুমান করতে পারছিনা।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি সদর থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার আগে জানা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে ঝালকাঠি থানায় একটি ইউডি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে ঘটনার পিছনে কি মোটিভ আছে আমরা তদন্ত করে দেখছি।