নিউজ ডেস্ক:
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞাকে প্রধান বিচারপতির অনুরূপ দায়িত্ব প্রদান করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ছাড়া আপিল বিভাগের অন্য পাঁচ বিচারপতিকে বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানান। বিচারপতি মো. ইমান আলী দেশের বাইরে থাকায় ওই আমন্ত্রণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি। অন্য চারজন অর্থাৎ, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচাপরতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেন হায়দার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
দীর্ঘ আলোচনার একপর্যায়ে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিরুদ্ধে ১১টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ–সংবলিত দালিলিক তথ্যাদি হস্তান্তর করেন। তার মধ্যে বিদেশে অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, নৈতিক স্খলনসহ আরও সুনির্দিষ্ট গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্যে আরও বলা হয়, বিচারপতি মো. ইমান আলী ঢাকায় প্রত্যাবর্তনের পর ১ অক্টোবর আপিল বিভাগের উল্লিখিত পাঁচ বিচারপতি এক বৈঠকে বসেন।
বৈঠকে ওই ১১টি অভিযোগ বিষদভাবে পর্যালোচনার পর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন, ওই সব গুরুতর অভিযোগ প্রধান বিচারপতিকে অবহিত করা হবে। তিনি যদি ওই সব অভিযোগের ব্যাপের কোনো সন্তোষজনক জবাব বা সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন, তাহলে তাঁর সঙ্গে বিচারালয়ে বসে বিচারকাজ পরিচালনা করা সম্ভব হবে না।
এ সিদ্ধান্তের পর ওই দিন (১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার অনুমতি নিয়ে পাঁচ বিচারপতি প্রধান বিচারপতির হেয়ার রোডের বাসভবনে সাক্ষাৎ করে অভিযোগগুলো নিয়ে বিষদভাবে আলোচনা করেন।
দীর্ঘ আলোচনার পরে তাঁর কাছ থেকে কোনো প্রকার গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা বা সদুত্তর না পেয়ে আপিল বিভাগের উল্লিখিত পাঁচ বিচারপতি তাঁকে সুষ্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে এ অবস্থায় ওই অভিযোগগুলোর সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে একই বেঞ্চে বসে তাঁদের (৫ বিচারপতি) পক্ষে বিচারকাজ পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। এ পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি সুষ্পষ্টভাবে বলেন যে সে ক্ষেত্রে তিনি পদত্যাগ করবেন। তবে এ ব্যাপারে পরের দিন ২ অক্টোবর তিনি তাঁর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। ২ অক্টোবর তিনি উল্লিখিত বিচারপতিদের কোনো কিছু অবহিত না করে রাষ্ট্রপতির কাছে এক মাসের ছুটির দরখাস্ত প্রদান করলে রাষ্ট্রপতি তা অনুমোদন করেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতিতে আপিল বিভাগের জেষ্ঠ্যতম বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞাকে দেশের প্রধান বিচারপতির অনুপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতির অনুরূপ কার্যভার পালনের দায়িত্ব প্রদান করেন।