নিউজ ডেস্ক:
শুরু হয়ে গেছে আম-জাম-কাঁঠালের মৌসুম। বাজারেও ধীরে ধীরে বাড়ছে ফলগুলোর উপস্থিতি। এ ফলগুলোর মধ্যে কালো জামে রয়েছে অসাধারণ কিছু প্রাকৃতিক পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা। এছাড়া জাম খাওয়াও খুব সহজ কারণ এর খোসা ছাড়াতে হয়না। এর মিষ্টি রসালো স্বাদ ছোটদের খুব প্রিয়। ত্বক, চুল ও সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী জাম। জামের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা জেনে নিই চলুন।
১। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
জামে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যেমন- ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন সি থাকে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে জাম অতুলনীয়ভাবে কাজ করে। এছাড়াও শরীরের হাড়কে শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে জাম।
২। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়
ঐতিহ্যগতভাবেই জাম ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। জামের গ্লিসামিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি ডায়াবেটিসের জন্য ভালো বলে বৈজ্ঞানিকভাবেও প্রমাণিত। কমপ্লিমেন্ট থার মেড এ প্রকাশিত একটি গবেষণা পর্যালোচনায় জানা যায় যে, জামের ডায়াবেটিক বিরোধী গুণ আছে। অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে জামের বীচি রক্তের সুগার লেভেল ৩০% পর্যন্ত কমাতে সাহায্য করে। এই ফলটি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
৩। ইনফেকশন ভালো করে
ঐতিহ্যগতভাবেই জাম গাছের বাকল, পাতা ও বীজ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়ে আসছে। ম্যালিক এসিড, গ্যালিক এসিড, অক্সালিক এসিড এবং ট্যানিন থাকে জাম উদ্ভিদে। একারণেই জাম উদ্ভিদ ও এর ফল ম্যালেরিয়া রোধী, ব্যাকটেরিয়ারোধী এবং গ্যাস্ট্রোপ্রোটেক্টিভ হিসেবে কাজ করে।
৪. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
জামে এলাজিক এসিড বা এলাজিটেনিন্স, এন্থোসায়ানিন এবং এন্থোসায়ানিডিন্স থাকে যা প্রদাহরোধী হিসেবে কাজ করে। এই উপাদানগুলো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে বলে কোলেস্টেরলের জারণ রোধ করে এবং হৃদরোগ সৃষ্টিকারী প্লাক গঠনে বাধা দেয়। এছাড়াও হাইপারটেনশন প্রতিরোধেও সাহায্য করে জাম। কারণ এতে প্রচুর পটাসিয়াম থাকে। ১০০ গ্রাম জামে ৫৫ গ্রাম পটাসিয়াম থাকে।
৫। পরিপাকে সাহায্য করে
আয়ুর্বেদিক ঔষধে জাম পাতা ব্যবহার করা হয় ডায়রিয়া ও আলসার নিরাময়ে। এছাড়াও মুখের স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যার ঔষধ তৈরিতেও ব্যবহার হয় জামপাতা। জাম খেলে মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়, দাঁত ও মাড়ি শক্ত ও মজবুত করে এবং দাঁতের মাড়ির ক্ষয় রোধে সাহায্য করে।
৬। ক্যান্সার প্রতিরোধেও সাহায্য করে
বিভিন্ন গবেষণায় জামের কেমোপ্রোটেক্টিভ বৈশিষ্ট্য প্রমাণিত হয়েছে। জাগেতিয়া জিসি এন্ড কলিগস এর করা এক গবেষণা মতে জানা যায় যে, জাম ফলের নির্যাসে রেডিওপ্রোটেক্টিভ উপাদান আছে। এতে আরো বলা হয় জামের নির্যাস ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ফ্রি র্যাডিকেলের কাজে এবং বিকিরণে বাধা দেয়।
৭। মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি
কালোজাম টিস্যুকে টান টান হতে সাহায্য করে। যা ত্বককে তারুণ্যদীপ্ত হতে সাহায্য করে। জাম ব্রেইন অ্যালারট হিসেবে কাজ করে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
এছাড়াও জামে প্রচুর পরিমাণে পানি ও ফাইবার থাকে বলে হাইড্রেটেড থাকতে ও ত্বককে স্বাস্থ্যবান করতে সাহায্য করে। ডিটক্সিফায়ার হিসেবেও কাজ করে জাম।
সূত্র: ইন্টারনেট ও উইকিপিডিয়া