জুলাই থেকে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সারা দেশ উত্তাল ছিল, যার ফলে ব্যাংকিং কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। আন্দোলন দমাতে সরকার কারফিউ জারি ও ইন্টারনেট বন্ধ করার মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ওই সময় ব্যাংকগুলোও অন্তত পাঁচ দিন বন্ধ ছিল, যার ফলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা নেমে আসে।
৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর ব্যাংক খাতে নগদ টাকার তীব্র সংকট দেখা দেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদ টাকা উত্তোলনের সীমা বেঁধে দেয়। এরপরও ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের আমানত ফেরত দিতে ব্যর্থ হতে থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ব্যাংক খাতে আমানত কমেছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। জুন শেষে আমানতের স্থিতি ছিল ১৭ লাখ ৪২ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা, যা আগস্টে কমে ১৭ লাখ ৩১ হাজার ৮৯০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক অস্থিরতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং কিছু ব্যাংকে সুশাসনের ঘাটতির কারণে মানুষের মধ্যে নগদ টাকা ধরে রাখার প্রবণতা বেড়েছে।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে ব্যাংক খাতে আমানতের প্রবাহ ঋণাত্মক হলেও ভালো ব্যাংকগুলোর আমানত প্রবৃদ্ধির ধারায় রয়েছে।
এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ১১-১৩ শতাংশ সুদে টাকা ধার দেয়া হচ্ছে। ব্যাংকগুলোর অবস্থান স্বাভাবিক করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা জানান, গ্রাহকদের আতঙ্ক দূর করার চেষ্টা চলছে এবং আমানত প্রবাহ দ্রুতই বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
এই পরিস্থিতিতে ব্যাংক নির্বাহীরা জানান, আমানত প্রবাহ পুনরুদ্ধারে সকল পক্ষকে ধৈর্য ধরতে হবে।