কয়েক বছর আগে সাগর ইসলামের দাদি মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি সাগর ইসলামের মায়ের কাছে এক গলার হার, একজোড়া কানের দুল ও একটি আংটি দিয়ে বলেন, এগুলো তুমি সাগরের বউকে দেবে। এই গহনাগুলো আমি আমার নাতির বউয়ের জন্য দিয়ে গেলাম। বিষয়টি পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও জানে। সম্প্রতি সাগর ইসলামের মাও মারা গেছেন। অন্যদিকে সাগর এখনো অবিবাহিত রয়ে গেছেন। মায়ের মৃত্যুর পর পরিবারের কোনো কোনো সদস্য দাবি করছেন, যেহেতু দাদি গহনাগুলো মায়ের হাতে দিয়ে গেছেন এবং মা তোমার বউকে দেওয়ার আগেই মারা গেছেন। তাই এগুলোতে আমাদের অধিকার আছে এবং উত্তরাধিকার সম্পত্তির হিসাবে তা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সাগর ইসলামের প্রশ্ন হলো, উল্লিখিত অবস্থায় গহনার ওপর মায়ের অন্য সন্তানদের কোনো অধিকার আছে কি না?
প্রাজ্ঞ আলেমদের বলেন, উপহার ও দান যার উদ্দেশ্যে করা হয় সেই তার মালিক। চাই তা সরাসরি উদ্দিষ্ট ব্যক্তির হাতে দেওয়া হোক বা উকিলের (মাধ্যম) হাতে দেওয়া হোক। উল্লিখিত বিবরণ অনুসারে দাদি গহনাগুলো সাগর ইসলামের বউয়ের জন্য দিয়ে গেছেন এবং তিনি অভিভাবক হিসেবে তার মাকে উকিল (মাধ্যম) বা অসি নিযুক্ত করেছেন। তাই মা উল্লিখিত গহনার মালিক হননি এবং তা তার সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত হবে না। তার ওয়ারিশরা এতে অংশ দাবিও করতে পারবে না। আল্লামা আলাউদ্দিন কাসানি (রহ.) লেখেন, ‘উকিল নিযুক্ত করার রোকন বা মূলভিত্তি ইজাব ও কবুল (প্রস্তাব ও গ্রহণ)। উকিল নিযুক্তকারী বলবে, আমি এই কাজে তোমাকে উকিল নিযুক্ত করলাম বা আমি তোমাকে এই কাজের অনুমতি দিলাম। উকিল প্রস্তাব গ্রহণ করবে। সে বলবে, আমি গ্রহণ করলাম অথবা অনুরূপ কোনো কথা বলবে। (বাদায়িউস সানায়ে : ৬/২০)
ফকিহ আলেমরা আরো বলেন, অনুমোদিত ও শর্তের অধীন বিষয়ে উকিল তার মুওয়াক্কিলের পক্ষ থেকেই কোনো কিছু গ্রহণ, বর্জন ও লেনদেন করে থাকে। (আল ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু, পৃষ্ঠা ৩৯৭৩)
আল্লাহ সর্ববিষয়ে সবচেয়ে ভালো জানেন।