বুধবার, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫

চোখ বেঁধে সব কাজ করতে পারে যে কিশোর !

নিউজ ডেস্ক:

কাপড় বা অন্য কোনো কিছু দিয়ে চোখ বেঁধে বিভিন্ন কারসাজি দেখানোর বিষয়টি কেবল জাদু কিংবা সার্কাসেই মানায়। কিন্তু এখন আর সার্কাস বা জাদু নয়, বাস্তবে চোখ বেঁধে স্বাভাবিক কাজ করার অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছে ভারতের এক কিশোর। তার নাম জিৎ ত্রিবেদি। ১৭ বছর বয়সি জিৎ এর দাবি, দৈনন্দিনের স্বাভাবিক কাজ করতে তার আর চোখের প্রয়োজন নেই। চোখ ছাড়াই গাড়ি চালানো, পড়াশুনা করা এমনকি সুইয়ে সুতা ঢুকানোর কাজও করতে পারে সে। এছাড়া একটি ব্যস্ত রাস্তায় গিয়ার ছাড়া একটি মোটরসাইকেল চোখ বেঁধে দীর্ঘ ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত চালিয়েছে জিৎ।

শুধু তাই নয়, দূরে একটি ব্যাগের মধ্যে অনবরত টেনিস বল ফেলতে পারে সে। এছাড়া তাকে উদ্দেশ্য করে কেউ কিছু ছুড়ে দিলে তা সে অনায়াসেই ধরতে পারে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রথমে স্টিলের একটি ধাতব দ্বারা তার চোখ দুটি ঢেকে দেয়া হয়। এরপর তার ওপর একটি কালো কাপড় দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দেয়া হয় তার চোখ। এরপরও তার সামনে কেউ যত দ্রুতই হাতের আঙ্গুল দেখাতে থাক না কেন সে অনায়াসে নির্ভুলভাবে তা বলতে পারে।

এছাড়া এভাবে চোখ বাঁধা অবস্থায় একটি লাইব্রেরিতে নিয়ে বহু সংখ্যক আলমারির মধ্যে একটি আলমারির তালা খুলে দিয়ে বই আনতে বলা হলে, সে স্বাভাবিকভাবেই তা করে দেখায়। শুধুই তাই নয়, ওই অবস্থায় একটি বইয়ের নির্দিষ্ট একটি পৃষ্ঠা বের করে পড়তে বললে সে তাও করে দেখায়। এমনকি ওই বই উল্টো করেও সাবলীলভাবে পড়ে দেখায় জিৎ।

বিজ্ঞান অনুসারে, যখন কোনো ব্যক্তি তার চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে তখন তার অন্য চারটি ইন্দ্রিয়শক্তি বৃদ্ধি পায়। সে চোখে সরাসরি না দেখতে পেলেও, এসব ইন্দ্রিয় তাকে চারপাশের বিভিন্ন বস্তু সম্পর্কে জ্ঞান দেয়। কিন্তু জিৎ অন্ধ নয়, তার সম্পূর্ণ সুস্থ দুটি চোখ আছে। সে বিজ্ঞানের এই সূত্র ধরে দীর্ঘ দিন মস্তিষ্কের ব্যয়ামের মাধ্যমে এই অসাধ্যকে সাধন করেছে। এর মাধ্যমে সে ওই সুপ্ত ইন্দ্রিয়গুলো ব্যবহারের সক্ষমতা অর্জন করেছে।

 

এই অতিমানবীয় কাজটি আয়ত্ত করতে জিৎ একজন মনস্তাত্বিক শিক্ষকের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তার শিক্ষকের নাম ভারত প্যাটেল। জিৎ সম্পর্কে ভারত প্যাটেল বলেন, ইন্দ্রিয়শক্তির ওপর জিতের খুব ভালো নিয়ন্ত্রণ বা দখল রয়েছে। যদি আমরা তার কোনো একটি ইন্দ্রিয় আচ্ছন্ন করে দিই বা ব্যাঘাত ঘটাই, তাহলে সে অন্যান্য ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে কাজ সম্পন্ন করতে পারে।

তিনি আরো বলেন, মস্তিষ্কের ব্যায়ামের মাধ্যমে সূক্ষ্ম ইন্দ্রিয়গুলোর কল্পনাতীত উন্নয়ন ঘটানো যায়। এটাকে ইংরেজিতে ‘সুপার সেন্সরি ডেভেলপমেন্ট’ বলা হয়ে থাকে। এই ব্যায়াম শারীরিকভাবে করানো হলেও এটি মূলত মন বা হৃদয়কে মিউজিকের মাধ্যমে বাহ্যিক দৃষ্টির মতো পূর্ণ জ্ঞান দেয়।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular