নিউজ ডেস্ক:
পেঁয়াজ কাটার অভিজ্ঞতা যাদের আছে তাদের সবারই কান্নার অভিজ্ঞতা আছে! এ কান্না আসলে পেঁয়াজের ঝাঁঝের কারণে চোখে পানি আসা। পেঁয়াজ কাটার সময় চোখ জ্বালা করে, চোখে পানি চলে আসে। তবে এ লেখাটির মাধ্যমে বলা হচ্ছে, কিছু উপায় অবলম্বন করলে চোখের পানি আর ঝরবে না। এজন্য ধন্যবাদ জানাতে পারেন যুক্তরাজ্যের গুড হাউসকিপিং নামক প্রতিষ্ঠানটিকে। তারা এর ৫টি কৌশল জানিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির তথ্যানুসারে, পেঁয়াজ কাটার আগে ৩০ মিনিট রেফ্রিজারেটরে কিংবা ১০-১৫ মিনিট ফ্রিজারে রেখে দিন। ফলে ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় পেঁয়াজে থাকা গ্যাস অর্থাৎ চোখের জন্য যন্ত্রণাদায়ক ঝাঁঝালো গ্যাস তৈরি প্রতিরোধ হবে। তবে পেঁয়াজ সবসময়ের জন্য রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করবেন না, এতে পেঁয়াজের স্বাদ নষ্ট হয়ে যাবে।
পেঁয়াজ কাটার সময় আমরা আসলে অসংখ্য কোষ কাটি। ফলে কোষের ভেতরে থাকা পদার্থগুলো মুক্ত হয়ে যায়। কোষে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড সালফোক্সাইড মিলে তৈরি করে সালফেনিক অ্যাসিড। কোষের ভেতরে থাকা বিভিন্ন এনজাইম সালফেনিক অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে তৈরি করে প্রোপেনিয়াল এস-অক্সাইড নামক সালফারের একটি উদ্বায়ী যৌগ। এই যৌগ বাতাসে ভেসে চলে আসে আমাদের চোখে। পরে তা চোখের জলীয় অংশের সঙ্গে বিক্রিয়ায় তৈরি করে সালফিউরিক অ্যাসিড। আর এই অ্যাসিডের কারণেই আমাদের চোখে জ্বালাপোড়া হয়। তখন চোখের ভেতরে ঢুকে পড়া অ্যাসিড দূর করে দিতেই মূলত চোখ থেকে পানি বের হয়।
পেঁয়াজের এই ঝাঁঝ প্রতিরোধের আরেকটি উপায় হচ্ছে, কাটার আগে পানিতে ভিজিয়ে রাখা। তবে এতে পেঁয়াজের স্বাদের সঙ্গে কিছুটা আপোষ করতে হবে। গুড হাউজকিপিং-এর পরামর্শ হচ্ছে, ‘পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে পানির পাত্রে ভিজিয়ে রাখুন। এতে পেঁয়াজের অ্যাসিড কমে যাওয়ায় কাটার সময় আর চোখের পানি ফেলতে হবে না।’
পেঁয়াজের মূল অর্থাৎ মাথার অংশটিতে সবচেয়ে বেশি ঝাঁঝালো গ্যাস থাকে। এই অংশটি বাদ দিয়ে পেঁয়াজ কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। প্রথমে পেঁয়াজ মাঝ বরাবর কেটে নিন। এরপর উভয় অংশ স্লাইস করে কাটুন, কেবল মূল অর্থাৎ মাথার অংশটি না কেটে ফেলে দিন।
আপনার চোখের ওপর পেঁয়াজের গ্যাসের প্রভাব কমাতে আরেকটি উপায় হচ্ছে, বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে যেমন জানালার পাশে অথবা পাখার নিচে পেঁয়াজ কাটুন। এতে বাতাসে পেঁয়াজের ঝাঁঝালো গ্যাস উড়ে যাওয়ায় চোখের সংস্পর্শে আসবে না।
অন্যতম আরেকটি উপায় হচ্ছে, পেঁয়াজ কাটায় ধারালো ছুরি ব্যবহার করুন। ধারালো ছুরি পেঁয়াজের কোষ কম ভাঙবে। ফলে কম গ্যাস উৎপন্ন হবে।