নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কুষ্টিয়া সার্কেলের একটি টিম। গতকাল রোববার দুপুর সাড়ে এগারটা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত দুদক কুষ্টিয়া সার্কেল এ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান সূত্রে জানা যায়, হট লাইনের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের অনিয়মের তথ্য পেয়ে দুদকের একটি দল অভিযান চালায়। অভিযানে হাসপাতালের নথিপত্র, উপস্থিতি তালিকা, রান্নাঘর, প্যাথলজি, ওষুধের কক্ষসহ হাসপাতালের বিভিন্ন দিক ক্ষতিয়ে দেখা হয়।
এসময় হাসপাতালের রান্নাঘরে রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত খাবারের ওজন কমসহ নানা অনিয়মের চিত্র পায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানকালে অসাধু উপায়ে সরকারি ওষুধ সংগ্রহের সময় জুয়েল রানা (২৭) নামের এক যুবককে আটক করে দুদক। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাকে একমাসের কারাদ- দেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের যাবতীয় নথিপত্র, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি তালিকা, রান্নাঘর, রোগীদের জন্য খাবার, এক্সে-রে রুম, প্যাথলজি ও ওষুধের কক্ষে অভিযান চালায়। এতে তেমন কিছু না পাওয়া গেলেও রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত খাবারে (মাছের) ওজন কম পায়। সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী প্রতিটি মাছের পিচের ওজন ১’শ গ্রাম হতে হবে। কিন্তু সদর হাসপাতালে রোগীদের জন্য বরাদ্ধকৃত প্রতিটি মাছের পিচের ওজন ছিলো ৮০ গ্রাম। যা ২০ গ্রাম কম। এবিষয়ে সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শামীম কবিরকে রোগীদের জন্য খাবার সঠিকভাবে পরিবেশনের নির্দেশনা দেন দুদক।
অন্যদিকে, সদর হাসপাতালে দুদকের অভিযানের খবর পেয়ে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরাদের মধ্যে ফিটফাট থাকতে দেখা গেছে। হাসপাতালে থাকা বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী ভাগিয়ে নেওয়া দালালরা কৌশলে সটকে পড়ে। তবে অভিযানের পর দুদকের সদস্যরা চলে গেলে তাদের উপস্থিতি আবারো লক্ষ্য করা যায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শামীম কবির বলেন, দুদকের সদস্যরা হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় রোগীদের খাবারে সামান্য ওজন কম পায়। পরবর্তীতে খাবারের ওজন সঠিকভাবে দেওয়া হয় সে বিষয়ে অনুরোধ করেছে দুদক।
দুদকের কুষ্টিয়া সার্কেলের সহকারী পরিচালক হোসেন ও উপসহকারী পরিচালক নাছরুল্লাহ হুসাইন জানান, হটলাইনে তথ্য পেয়ে হাসপাতালের অনিয়ম অনুসন্ধানে অভিযান চালানো হয়। এসময় সরকারি ওষুধ বেনামে সংগ্রহ করার অভিযোগে এক যুবককে আটক করা হয়। এছাড়া রান্না ঘরে খাবারের ওজন কম দেওয়ার চিত্র পাওয়া যায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান জানান, কৌশলে সরকারি ওষুধ উত্তোলন করে সংগ্রহ ও গণউপদ্রব সৃষ্টি করার অভিযোগে সদর হাসপাতাল থেকে জুয়েল রানাকে হাতেনাতে আটক করে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। অভিযুক্ত যুবক জুয়েল রানাকে দন্ডবিধির ১৮৬০/২৯১ ধারায় ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়।