জাহিদ গোপালগঞ্জ থেকে আটক : পুলিশকে অভিনন্দন
নিউজ ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গা ডিবি কার্যালয় থেকে পলাতক ডাকাত সদস্য জীবননগর কর্চাডাঙ্গা’র জাহিদকে ১২দিন পর গোপালগঞ্জ মকসুদপুর থেকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে তাকে আটক করা হয়। পরে চুয়াডাঙ্গা ডিবি কার্যালয়ে থেকে পাঠানো হয় আদালতে। বিজ্ঞ আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এস আই আশরাফ বিশ্বাস ও আবুবক্কর সিদ্দিকসহ চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস দল গোপালগঞ্জ জেলার মকসুদপুর থানার গোপিনাথপুর গ্রামে জনৈক বাবুলের বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানকালে চুয়াডাঙ্গা ডিবি কার্যালয় থেকে পলাতক ডাকাত সদস্য জীবননগর উপজেলার কর্চাডাঙ্গা গ্রামের লাইনপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলামকে আটক করেন। পরে আটককতৃ আসামীকে চুয়াডাঙ্গা ডিবি কার্যালয়ে আনার পর গতকালই তাকে আদালতে পাঠানো হয়। বিজ্ঞ আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। জাহিদকে আটক করলে সাধারণ মানুষ পুলিশকে অভিনন্দন জানায়।
যেভাবে পালায় ডাকাত সদস্য জাহিদ: গত ১ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে অস্ত্রসহ আটক হয় জাহিদুল। পরদিন রোববার ভোররাতে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের জানায় সে বাথরুমে যাবে। এসময় এক পুলিশ সদস্য তার হ্যান্ডক্যাপ খুলে বাথরুমে নিয়ে যায়। পরে হ্যান্ডক্যাপ লাগিয়ে যথাস্থানে রাখে আটক ডাকাত সদস্যকে। এর কিছু সময় পর পাহারারত ওই পুলিশ সদস্য বাথরুমে গেলে এবং অপর সদস্যরা অবচেতন থাকলে সবার অগচরে সুযোগ বুঝে হ্যান্ডক্যাপ খুলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় ডাকাত সদস্য জাহিদ। চুয়াডাঙ্গা ডিবি কার্যালয় থেকে পালিয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের পাশে মাথাভাঙ্গা নদীর তীর ধরে জীবননগর সড়কে ওঠে সে। পরে জীবননগর কর্চাডাঙ্গা গ্রামের বাড়িতে যায় সে। গ্রামের বাড়ি থেকে কিছু টাকা পয়সা যোগাড় করে সেখান থেকেও পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় সে। পরে সাফদারপুর শ্বশুরবাড়িতে যায় পলাতক ডাকাত সদস্য জাহিদ। এরপর শ্বশুরবাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায় সে। ঢাকাতে একদিন থাকার পর গোপালগঞ্জ জেলার মকসুদপর থানার গোপিনাথপুর এলাকার জনৈক বাবুলের বিস্কুট ফ্যাক্টরীতে অবস্থান নেয়। এই বিস্কুট ফ্যাক্টরী থেকেই সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশের সহায়তায় তাকে আটক করে চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
উল্লেখ, গত ১ সেপ্টেম্বর শনিবার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল নিয়মিত অভিযানে বের হয়। নিয়মিত অভিযানে পরিচালনার সময় ডিবির দলটি একই দিন রাত ৮টার দিকে আন্দুলবাড়ীয়া ও শাহাপুর এলাকার মধ্যবর্তী লতিফ ইটভাটার কাছে পৌছালে পাঁকা গ্রামের দিক থেকে আসা ডাকাত সদস্য জাহিদ ডিবি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এস আই আশরাফুল ইসলাম ও আবুবক্কর সিদ্দিকসহ সঙ্গীয় ফোর্স তাকে তাড়িয়ে ধরেন। পরে তার শরীর তল্লাশি করে পিছন দিক থেকে উদ্ধার করা হয় একটি কাটা রাইফেল। অস্ত্রসহ আটক ডাকাত সদস্য জাহিদকে রাখা হয় ডিবি কার্যালয়ে। পরদিন রোববার ভোরে সুযোগ বুঝে কৌশলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় সে। এ ঘটনায় শহরজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। একই সাথে দায়িত্বে অবহেলার কারণে দায়িত্বরত ৩ পুলিশ কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্তসহ গঠন করা হয় ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। এর পর জেলা পুলিশের সকল বিভাগ একের পর এক অভিযান চালালেও দীর্ঘ ১২দিন পর তাকে গোপালগঞ্জ থকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি।