ধানের ন্যায্য মূল্য ও পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে
নিউজ ডেস্ক:ধানের ন্যায্য মূল্য ও পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসুচীর অংশ হিসাবে জেলা প্রশাসক বরাবর পৃথক স্মারকলিপি পেশ করেছে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলা বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহ্বায়ক এ্যাড. ওয়াহেদুজ্জামান বুলার নেতৃত্বে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, যুগ্ম-আহ্বায়ক মজিবুল হক মালিক মজু, জেলা বিএনপির সদস্য শরিফুজ্জামান শরিফ, এম. জেনারেল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম রতন, এ্যাড. শাহজাহান মুকুল, এ্যাড. শামীম রেজা ডালিম, এস.কে সাদী, সিরাজুল ইসলাম মনি কমিশনার, জাহানারা বেগম, বি.কে বাবলু, জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সৈয়দ হেদায়েতুল আসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আ স ম আব্দুর রউফ, জেলা যুবদলের সভাপতি শরিফ উজ জামান সিজার, সিনিয়র সহ-সভাপতি আশরাফ বিশ্বাস মিল্টু, সহ-সভাপতি সোহেল আহমেদ মালিক সুজন, সহ-সভাপতি মাগরিবুর রহমান মাগরিব, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাজী রবিউল হক মল্লিক, সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুমন, সহ-মৎস্য ও পশুপালন বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আজাদ হোসেন, সদস্য রাহাত হাসান মালিক রাজীব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম পিটু, সিনিয়র সহ-সভাপতি শরিফুল আলম বিলাস, সাধারণ সম্পাদক এম.এ তালহা, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল জাহিদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আহসান হাবিব মুক্তি, জেলা জাসাস সভাপতি সহিদুল হক বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবীব সেলিম, জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মাহমুদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরিফ আহমেদ শিপ্লব, ছাত্রনেতা মতিউর রহমান মিশর, আবাবিল হোসেন সাদ্দাম, জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক সাবু তরফদার, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিকী বকুল, যুগ্ম-আহ্বায়ক কামরুজ্জামান বাবুল, মনিরুজ্জামান মনি, লুৎফর রহমান, বিএনপি নেতা শেফালী খাতুন কমিশনার, সাইদুর রহমান প্রমুখ।
মেহেরপুর:
কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য ও পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ভাতা প্রদানের দাবিতে মেহেরপুর জেলা বিএনপি’র কার্যালয় হতে পদযাত্রাসহ জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে মেহেরপুর জেলা বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে মেহেরপুর জেলা বিএনপি’র সভাপতি মাসুদ অরুনের নেতৃত্বে পদযাত্রাসহ নেতাকর্মীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে। এ সময় জেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুর রহমান, ইলিয়াছ হোসেন, আনছারুল হক, পৌর বিএনপি’র সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, গাংনী উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি রেজাউল হকসহ শতাধিক নেতা-কর্মী ওই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও এদিন জনগনের নিরাপত্তা রক্ষায় ও স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কিত স্মারকলিপি মেহেরপুর পুলিশ সুপার বরাবর প্রদান করেছে জেলা বিএনপি।
উভয় স্মারকলিপিতে বলা হয়- বোরো ধানের দাম নিয়ে কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। উৎপাদিত ধানের মূল্য উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেকগুন কম হওয়ায় কৃষকরা হাহাকার করছে। উৎপাদন খরচ থেকে তিনশো টাকা কমে প্রতি মন ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে দুই হাজার টাকা। ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় টাঙ্গাইল, জয়পুরহাট ও নেত্রকোণাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা পাকা ধানক্ষেতে আগুন দিচ্ছে। পাকা ধানে মই দিচ্ছে, সড়কে ধান ছিটিয়ে প্রতিবাদ করছে। সরকার প্রতি মন ধান কেনার জন্য ১ হাজার ৪০ টাকা প্রদান করলেও কৃষকের হাতে যাচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বাকী টাকা যাচ্ছে সরকারের আনুকুল্য পাওয়া মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে। এ নিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যথা নেই। ধানের দাম কমার জন্য উদ্ভূত সংকটে সরকার উদাসীন। এ বিষয়ে তাদের কোন দায় নেই বলে কৃষিমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। সরকারের গণবিরোধী নীতির কারণেই কৃষকরা উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ কৃষকরাই বাংলাদেশের আত্মা ও দেশের প্রাণ। কৃষকদের রক্ষা করতে না পারলে দেশে দুর্যোগ নেমে আসবে। তারা উৎপাদন বন্ধ করে দিলে দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে, ১৭ কোটি মানুষ না খেয়ে মরবে। মধ্যস্থতাকারি সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ধান ক্রয় না করে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা ও মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধ করার জন্য চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ স্ব স্ব জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারের প্রতি জোর দাবী জানান।
স্মারকলিপিতে আরো উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি জাতীয় মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন ও বকেয়া মজুরীসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশ রষ্ট্রায়াত্ত্ব বিভিন্ন পাটকল শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। দেশের ২৬টি পাটকলে একযোগে লাগাতার ধর্মঘট শুরু হলেও সরকার তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিচ্ছে না। ১০ থেকে ১৫ সপ্তাহ মজুরী না পেয়ে শ্রমিকরা অর্ধাহার ও অনাহারে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ২০১৫ সালের মজুরী কমিশন রোয়েদাদ এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি। অথচ রমজান মাস শুরু হয়েছে। এ মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্য কেনার সামর্থ্য তাদের নেই। কর্মচারীদের চার মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থের প্রতি সরকারের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। বরং তাদের ওপর শোষণের মাত্রা আরও তীব্র হয়েছে। শ্রমিকরা পাটজাত দ্রব্য উৎপাদন করছে বিনিময়ে তারা মজুরী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে বৈষম্য ও বঞ্চনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে পাটকল শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানানো হয়।