বোমা উদ্ধার : ছাত্রলীগের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রলীগের কর্মী সভায় বোমা হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীয় সাহিত্য পরিষদ চত্ত্বরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় লাল কচটেপ মোড়ানো একটি হাত বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে এর সঙ্গে জড়িত কাউকে আটকের খবর পাওয়া যায়নি। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা ছাত্রলীগ।
ঘটনা প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহাবুল ইসলাম বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনে আ.লীগ দলীয় মনোনীত নৌকার প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনকে বিজয়ী করতে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে রোববার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ চত্ত্বরে পৌর শহরের ৯নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কর্মী সভার আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহায়মেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক। এছাড়াও ছাত্রলীগের কয়েক’শ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় কর্মী সভা। এশার আযানের জন্য কিছু সময় সভার কার্যক্রম বিরতি ঘোষণা করা হয়। এই সময়ের মধ্যে অজ্ঞাত ৪০/৪৫ জন আমাদের সভা প্রধান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অনিক জোয়ার্দ্দার ও উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বোমা নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। তবে বোমা দু’টি বিস্ফোরিত না হওয়ায় প্রাণে রক্ষা পায় আমরা। তবে আতঙ্কে দ্বিকবিদিক ছুটতে থাকে নেতাকর্মীরা, পন্ড হয়ে যায় আমাদের কর্মী সভা। এ ঘটনার তীব্র নিন্দাসহ দুষ্কৃতিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ চত্ত্বরে ছাত্রলীগের কর্মী সভায় বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌছে লাল কচটেপ মোড়ানো একটি হাত বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। অনুসন্ধান চলছে, দ্রুত জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে।’
এদিকে মেইলে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা ছাত্রলীগ জানিয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ মনোনীত মহাজোট প্রার্থী জননেতা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনের নৌকা মার্কায় বিজয়ী করার লক্ষে ধারাবাহিক ভাবে প্রতিটা ওয়ার্ডে ছাত্রলীগের নির্বাচনী কর্মীসভা অনুযায়ী রোববার এশার নামাজের পর চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ প্রাঙ্গনে ৯নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের অন্যতম নেতা সোয়েব রিগানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহাবুল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ জোয়ার্দ্দারসহ জেলা ও সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দরা। সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান হিমেল মল্লিকের পরিচালনায় কর্মীসভায় বক্তব্য রাখেন প্রধান অতিথি। ঠিক সেই মুহুর্তে বিএনপি-ছাত্রদলের আনুমানিক ৪০-৫০ জন পুরাতন হাসপাতাল রোড থেকে কোর্ট মোড় হয়ে একের পর এক বোমা মারতে মারতে সাহিত্য পরিষদের ভেতরে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অনিককে লক্ষ করে দুইটি হাত বোমা নিক্ষেপ করে, একটি সামান্য শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এরপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মানব ঢাল করে তাদের নেতাকে রক্ষা করে এবং তাৎক্ষনিক একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগ। মিছিলটি দলীয় কার্যালয়ে এসে প্রতিবাদ সভায় রুপ নেয়। প্রতিবাদ সভায় এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরেফিন আলম রন্জু, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বর্তমান জেলা যুবলীগ সদস্য সিরাজুল ইসলাম আসমান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদের, সাবেক সভাপতি জেলা যুবলীগের সদস্য রেজাউল করিম, পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মিরাজুল ইসলাম কাবা, যুবলীগ নেতা সুমন, তারেক প্রমূখ।
আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. সাহাবুল হোসেন, সাবেক ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ জোয়ার্দ্দার, সাবেক সহ-সম্পাদক বাপ্পী, সাবেক অর্থ সম্পাদক রিমন হোসেন, সাবেক প্রচার সম্পাদক আব্দুর রহমান, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানিম হাসান তারেক, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি জাবিদুল ইসলাম জাবিদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, সাবেক স্কুল ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রাজু আহম্মেদ, জেলা ছাত্রলীগ নেতা অয়ন হাসান জোয়ার্দ্দার, জেলা প্রজন্মলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বরকত হাসান জোয়ার্দ্দার, বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ চুয়াডাঙ্গা সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রানা, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আহম্মেদ জিম, তানভির আহম্মেদ সোহেল, পৌর ছাত্রলীগ নেতা শিমুল লস্কর, হোস্টেল ছাত্রলীগের নেতা জুয়েল রানা, আলিফনুর, ইসরাইল, কলেজ ছাত্রলীগ নেতা রিমন, সোহাগ, আকাশ, ইমন, ফিরোজ, শাওন, রাব্বি, রকি, শরিফ, মিঠুন, অভি, সদর থানা ছাত্রলীগের নেতা রেদওয়ান আহম্মেদ রানা, সাব্বির, রাজু, টোকন, মোমিন, জান্নাত, যুবলীগ নেতা মন্টা, সাইদ প্রমুখ।
বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা থেকে এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির ছাত্রদলের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানায়। সেই সাথে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের লক্ষে বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিরা যে নীল নকশা করেছে তা প্রতিহত করতে ছাত্রলীগের সকল ইউনিটকে নির্দেশ দেন নেতৃবৃন্দরা। প্রতিবাদ সভার সভাপতিত্ব করেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক।