চুয়াডাঙ্গা প্রদীপন মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠের সাবেক অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দীনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের গণস্বাক্ষর করা একটি স্মারকলিপি কয়েকজন অভিভাবক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মিডিয়া সেলে জমা দেন।
স্মারকলিপিতে অভিভাবকরা উল্লেখ করেন, প্রদীপন মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠ জেলার একটি অন্যতম স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রাথমিক শিক্ষার জন্য জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জেলার সকল শ্রেণির অভিভাবকের সন্তান এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। এই প্রতিষ্ঠানে মো. শাহাবুদ্দীন অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা এবং পরকীয়ার অভিযোগ রয়েছে। তার স্ত্রী তার নামে নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা করেছেন। তিনি বর্তমানে জামিনে আছেন। মো. শাহাবুদ্দীন গত ১৮ আগস্ট অধ্যক্ষের পদ থেকে অব্যহতি চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছিলেন। সাবেক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ রয়েছে। তিনি যেন নির্বিঘেœ দুর্নীতি করতে পারেন, এ জন্য দীর্ঘ সময় অভিভাবক সদস্য নির্বাচন হতে দেননি এবং কোনো অজানা কারণে বেশ কয়েকজন শিক্ষক অবসরে গেলেও শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন মনে করেন না।
তার মনোনিত অতিথি শিক্ষক দ্বারা পাঠদান করাতেন। অধ্যক্ষ হিসেবে সকল অভিভাবকের সাথে তার সমান আচরণ করা উচিত। কিন্তু তিনি তা করতেন না। বিদ্যালয় চলাকালীন সময় তার কক্ষে চিহ্নিত কয়েকজন নারী অভিভাবকের সাথে খোশগল্পে লিপ্ত থাকতেন। তখন তিনি কারো সাথে দেখা করতেন না। জোর করে দেখা করতে গেলে অভিভাবকদের সাথে দুর্ব্যবহার করতেন। তিনি প্রদীপন মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠে কর্মরত থাকা অবস্থায় একটি এমপিওভুক্ত মাদ্রাসাতেও কর্মরত ছিলেন এবং একই সাথে দুই প্রতিষ্ঠান থেকেই আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন। যা চাকরি বিধির পরিপন্থী।
ওই স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, তিনি প্রদীপন মাধ্যমিক বিদ্যাপীঠে পুনর্বহালের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন। এমতাবস্থায় আমরা অভিভাবকগণ উদ্বিগ্ন। কারণ তার মতো একজন অসৎ চরিত্রের, দুর্নীতিপরায়ণ, স্বেচ্ছাচারী ব্যক্তি পুনর্বহাল হলে প্রতিষ্ঠানটি সুনাম হারাবে এবং যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান এরকম একজন বিতর্কিত ব্যক্তি, সেই প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের সন্তানেরা কী শিখবে, সে ব্যাপারে আমরা বিচলিত ও শঙ্কিত। তাকে পুনরায় অধ্যক্ষ পদে আমার চাই না।’
ওই স্মারকলিপিতে সাবেক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ, পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ ও অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জানানো হয়।