নিউজ ডেস্ক:
মহান বিজয় দিবসে দর্শনায় বিএনপি-ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের ৯ জন আহত হয়। এসময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। তবে পুলিশ বলছে, কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এমনকি উভয় পক্ষের ৯জন আহত হওয়ার তথ্যও পুলিশের কাছে নেই বলে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আকরাম হোসেন জানান।
গতকাল শনিবার সকালে দর্শনা পৌরসভার উদ্যোগে দর্শনার পৌর কমান্ডসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক, পেশাজীবি, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও থিয়েটার গ্রুপ দর্শনা কলেজ মাঠে একত্রিত হয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং শপথ বাক্য পাঠ শেষে বিজয় র্যালী বের করে কেরুজ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধের উদ্দেশ্য রওনা হয়। র্যালীর অগ্রভাগে ছিল দর্শনা পৌর মুক্তিযোদ্ধারা এরপর চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলামের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের র্যালী। বিজয় র্যালীটি দর্শনা পুরাতন বাজার পার হয়ে দর্শনা রেলগেটের নিকট পৌছাঁলে দর্শনা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক নাহারুল ও হাজী শওকতের নেতৃত্বে বিএনপি একাংশের একটি র্যালী নিয়ে বিজয় মিছিলের অগ্রভাগে ঢুকে পড়ে। এসময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির র্যালীতে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে। এরপরই র্যালীটি দর্শনা প্রেসক্লাবের সামনে পৌছালে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে দু’দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কয়েক দফা বিক্ষিপ্ত সংর্ঘষ শুরু হলে উভয়পক্ষের ৯জন নেতাকর্মী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় বিজয় র্যালীতে অংশগ্রহনকারীরা আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে দিকবিদ্বিক ছুটোছুটি করে। এরমধ্যে বিএনপি আরও দুইটি অংশের পৌর সভাপতি শাওন তরফদার ও বাবু খান অংশের হাবিবুর রহমান বুলেটসহ মোমিনুলের নেতৃত্বে প্রায় চারশত নেতাকর্মীর দুইটি র্যালী দর্শনা রিক্সাষ্ট্যান্ড বটতলায় পৌঁছালে পুলিশ তাদেরকে বাঁধা দিলে দুই অংশের র্যালী পিছনে ফিরে চলে যায়। অন্যদিকে, বিএনপির অপর অংশের সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক নাহারুল ও হাজী শওকতের নেতৃত্বের র্যালীতে থাকা নেতাকর্মীরা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া করতে থাকে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। এসময় র্যলী নিয়ে আসা বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা শহীদ স্মৃতিসৌধে ফুল না দিয়ে আতঙ্কিত হয়ে বাড়ী ফিরে যায়।
এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছে ছাত্রদলের কর্মী স¤্রাট (২৬), মাসুদ (২২), জাহিদ (২৩), রাশেদ (২৭), সাইফুল ইসলাম (২৬), যুবদল নেতা শফিউল্লাহ (৪০), জালাল উদ্দিন (৪৫)। অপরদিকে ছাত্রলীগের কর্মীদের অভিযোগ ছাত্রদলের ক্যাডারদের অর্তকিত হামলায় আহত হয়েছে যুবলীগের কর্মী আব্দুর রহমান (৩৫) ও দর্শনা কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জেল হোসেন তপু (৩৭)। এবিষয় ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ পারভেজ ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি একাংশের একটি গ্রুপ পরিকল্পিতভাবে দর্শনা সর্বস্তরের মানুষের র্যালীটি পন্ড করার জন্য এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। বিএনপির সংগঠনিক সম্পাদক নাহারুল ইসলাম বলেন, আমদের বিশাল মিছিল দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ছেলেরা আমাদের উপর হামলা করে ৮ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে আহত করেছে। দর্শনা পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান বুলেট জানান, বিএনপি সুস্থ ধারার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা র্যালী পন্ড করতে এঘটনা ঘটিয়েছে। দর্শনা পৌর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিএনপি র্যালী নিয়ে আমাদের আগে চলে গেলো যাক, তাতে আবার মারামারি করা দরকার কি ছিল? এবিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আকরাম হোসেন জানান, হামলা পাল্টা হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি বা কেউ আহত হয়েছে এমন তথ্যও তিনি জানেন না বলে জানান। এ ঘটনায় দামুড়হুদার সার্কেল এএসপি কলিমউল্লাহ জানান, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের পর বিষয়টি পরিস্কার করে বলা যাবে।
DailySomoyerSomikoron