সাকিব আল হাসানঃ
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাজরাহাটি ও বোয়ালমারি গ্রামের মাঝামাঝি স্থান থেকে উদ্ধার হওয়া অর্ধগলিত নারীর মরদেহের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম খালেদা আক্তার মুন্নি (২১)।
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে মরদেহের শরীরে আঁকা ট্যাটু-পোশাক দেখে তার মা ও বোন জামায় মুন্নির মরদেহ বলে সনাক্ত করে।
গত ৯ এ নভেম্বর শনিবার বাড়ী থেকে বের হয়ে আর বাড়ী ফেরে নি খালেদা। ৩ বোনের মধ্যে মন্নী ছিলো সবার ছোট।
স্থানীয়দের ধারনা, মুন্নিকে কৌশলে ডেকে এনে দুর্বৃত্তরা ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। এরপর সুযোগ বুঝে মরদেহ রেখে পালিয়ে যায় তারা।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে স্থানীয়রা কৃষি কাজ করার সময় বিবস্ত্র অবস্থায় অর্ধগলিত নারীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে মরদেহ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠাই।
নিহত খালেদা আক্তার মুন্নি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়ীয়া গ্রামের মৃত. খোয়াজ আলীর মেয়ে। মুন্নি ছিলেন স্বামী পরিতক্ত্যা।
এ ঘটনায় নিহত মুন্নির মা বাদি হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত মুন্নির প্রতিবেশি রাবেয়া খাতুন নামের এক নারী গণমাধ্যমকে বলেন, বিয়ের আগে থেকেই মুন্নি অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল। মাঝেমধ্যেই বাইরে যাতায়াত করতো। সকালে যেতো আর সন্ধার আগে বাড়িতে ফিরতো। এ কারণে তাকে বিয়ে দিয়ে দেন পরিবারের সদস্যরা। কিছুদিন সংসার করার পর স্বামীর সঙ্গেও বিচ্ছেদ ঘটে। এরপরও যে একই কাজ করতো। গত কয়েকদিন আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। আজ শুনছি তার মরদেহ পাওয়া গেছে।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, কয়েকদিন আগে বাড়ি থেকে বের হন একজনের সাথে দেখা করার কথা বলে। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। তাকে ডেকে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়াছে তার পরিচিত কেউ। হত্যাকারীদের বিচারের দাবি করেন তারা।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৭টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদরের হাজরাহাটি-বোয়ালমারি গ্রামের মাঝামাঝি একটি পানবরজের পাশ থেকে অজ্ঞাত হিসেবে মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ। এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মরদেহ দেখে সেটি মুন্নি বলে সনাক্ত করে পরিবারের সদস্যরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদুর রহমান , মুন্নিকে পরিকল্পিতভাবেই হত্যা করা হয়েছে। দেড় বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মায়ের সাথেই থাকতো। নিহত মুন্নির মায়ের ভাষ্য, সে বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত ছিল। প্রতিদিনই সন্ধ্যার আগে বাড়িতে চলে আসতো। তবে রাতে কখনো বাইরে থাকতো না।
তিনি আরও বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মুন্নির মা বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।