চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে হালিমা বেগম (৫৫) নামের এক রোগীর অপারেশন চলাকালে মৃত্যু হয়েছে। তিনি পিত্তথলিতে পাথর (গলব্লাডার স্টোন) রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং সার্জারি বিভাগে ডা. এহসানুল হক তন্ময়ের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অস্ত্রোপচারের জন্য হালিমাকে হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। তবে অপারেশন চলাকালে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। হালিমা বেগম চুয়াডাঙ্গা শহরের সিঅ্যান্ডবি পাড়ার আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী।
হালিমার ছেলে হারুন আর রশিদ জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১২ দিন আগে তারা হালিমাকে রাজশাহী নিয়ে যান। বিভিন্ন পরীক্ষা—নিরীক্ষার পর সেখানে চিকিৎসকরা জানান, হালিমার পিত্তথলিতে পাথর রয়েছে এবং অপারেশন করার পরামর্শ দেন। রাজশাহী থেকে ফিরে আসার পর তাকে সদর হাসপাতালের সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. এহসানুল হক তন্ময়ের নিকট নেয়া হয়। এসময় তিনি হালিমাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি এবং অপারেশনের পরামর্শ দেন। গত রোববার সকাল ৯টায় পরিবারের সদস্যরা হালিমাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হারুন আর রশিদ জানান, অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার আগেও তার মা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছিলেন। তবে বেলা ১১টার পর তাকে অপারেশন থিয়েটারের ভেতরে ডাকা হয়। তিনি বলেন, ‘অপারেশনের শেষ পর্যায়ে আমার মা হার্ট ফেল করেছে এবং তিনি মারা গেছেন বলেন, ডা. তন্ময়।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. এহসানুল হক তন্ময় বলেন, ‘গত সপ্তাহে হালিমা বেগম চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসেন। তার পিত্তথলিতে পাথর ছিল। মেডিকেলের ভাষায় এই রোগটিকে ‘গলব্লাডার স্টোন’ বলা হয়। যার কারণে তার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল। অপারেশনের শেষ মুহূর্তে রোগীর অ্যানেসথেসিয়া কমপ্লিকেশন দেখা দেয়। এসময় হার্ট ফেইলিউর—এর কারণে তিনি মারা যান। বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জন ও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সাজ্জাৎ হাসান জানেন। তিনি অপারেশন থিয়েটারে এসে ঘটনাটি পর্যবেক্ষণও করেছেন।’
অ্যানেসথেসিয়া কনসালটেন্ট ডা. নুরুন্নাহার খানম বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রোগীর ওপেন সার্জারি অস্ত্রোপচার শুরু করা হয়। অপারেশনের পূর্বে রোগীর ফিটনেসসহ যাবতীয় পরীক্ষা—নিরীক্ষা করে অপারেশনের জন্য ফিট থাকায় তাকে অ্যানেসথেসিয়া দেয়া হয়। অস্ত্রোপচারের একেবারে শেষে পর্যায়ে ফেইলিউরে তিনি মারা যান। তবে আমাদের পক্ষ থেকে সিপআর, আম্বু, ব্রেথসহ সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।’
এদিকে, গতকাল দুপুরেই পরিবারের সদস্যরা হালিমার লাশ বাড়িতে নেয়। পরে বাদ মাগরিব জানাজা শেষে সিঅ্যান্ডবি উত্তরপাড়া কবরস্থানে তার দাফনকার্য সম্পন্ন করে পরিবার।