নিউজ ডেস্ক:
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ২ হাজার ৩২৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছে।
গতকাল রবিবার দুপুরে নগর ভবনের কেবি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এ বাজেট ঘোষণা করেন।
এর আগে কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত বাজেট অধিবেশনে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ৬৬২ কোটি ৬৬ লাখ ১৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট পাস হয়। গত অর্থবছরে বাজেট ছিল ২ হাজার ২২৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
নগরের প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়। তবে গত অর্থ বছরেও একই বরাদ্দ থাকলেও সংশোধিত বাজেটে পাশ হয় ৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় খাত ভিত্তিক বাজেট পাঠ করেন অর্থ ও সংস্থাপন স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মো. শফিউল আলম, উপস্থিত ছিলেন চসিকের সচিব মো. আবুল হোসেন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা নাজিয়া শিরিন প্রমুখ।
সিটি মেয়র বলেন, বাস্তবসম্মত এবং বাস্তবায়নযোগ্য একটি বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাস্তবতাবিবর্জিত কোন বাজেট ঘোষণা করা হয়নি। প্রতিটি বিষয় পরিকল্পনা প্রসূত। এর মধ্যে কোনটি বর্তমান অর্থবছরে, কোনটি আমাদের বাকি মেয়াদে বাস্তবায়নযোগ্য। সবমিলে আগামী তিন বছর পর আমরা বাসযোগ্য একটি নগর গড়ে তুলতে পারব। তিনি বলেন, আগামীতে বাস্তবায়ন করা হবে এমনটি ২১টি পরিকল্পনা আমরা গ্রহণ করেছি। এর মধ্যে আছে নগর ভবন নির্মাণ, নগরে মেট্রোরেল স্থাপন, নতুন সড়ক নির্মাণ, ফিরিঙ্গি বাজার থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
বাজেট প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এবার চসিকের নিজস্ব উৎসে আয় ধরা হয়েছে ৯৯৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে এ খাতে আয় হয়েছিল ৩৬৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। নিজস্ব উৎস আয়ের মধ্যে আছে বকেয়া কর ও অভিকর ১৮১ কোটি ১২ লাখ টাকা, গত অর্থ বছরে এ খাতে আয় হয়েছিল ৩২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। হাল কর ও অভিকর প্রস্তাব করা হয়েছে ৫০০ কোটি, গত অর্থ বছরে এ খাতে আয় হয় ৭৩ কোটি টাকা।
অন্যান্য করাদি খাতে প্রস্তাব করা হয় ১২৬ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, গত অর্থবছরে এ খাতে আয় হয় ১০৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ফিস খাতে প্রস্তাব করা হয় ৮৩ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, গত অর্থবছরে আয় হয় ৭৩ কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। জরিমান প্রস্তাব করা হয় ৫০ লাখ টাকা, গত অর্থবছরে আয় হয় ২০ লাখ টাকা। সম্পদ হতে অর্জিত ভাড়া ও আয় খাতে প্রস্তাব করা হয় ৫৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, গত অর্থ বছরে এ খাতে আয় হয় ৪২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সুদ প্রস্তাব করা হয় ৫ কোটি টাকা, গত অথবছরে আয় হয় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
বিবিধ খাতে প্রস্তাব করা হয় ২১ কোটি ১২ লাখ টাকা, গত বছর এ খাতে আয় হয় ১৬ কোটি ৮৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এবার ভর্তুকি প্রস্তাব করা হয় ২২ কোটি ৫ লাখ টাকা, গত বছর এ খাতে আয় হয় ১৮ কোটি ১ লাখ টাকা। এবার উন্নয়ন অনুদান ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৯০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের ছিল ২৬২ কোটি ২৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। বাজেটে মুক্তিযোদ্ধাদের গৃহনির্মাণ খাতে ২ কোটি টাকা, বাঙালি ঐতিহ্যের সঙ্গে শিশুদের পরিচয় ঘটাতে ৫ কোটি টাকা, অটিজম শিশুদের জন্য ২ কোটি টাকা, মাদক নিয়ন্ত্রণে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।