নিউজ ডেস্ক:
দেশে প্রতি মাসে গড়ে ছোলার চাহিদা ১২ হাজার মেট্রিক টন। রমজানে ছোলার চাহিদা থাকে প্রায় ৫০ হাজার টন। বছরে ছোলার চাহিদা থাকে প্রায় দুই লাখ টন। কিন্তু চলতি অর্থ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্রথম ১০ মাসে আমদানি হয়েছে চাহিদার দেড়গুণের চেয়েও বেশি- দুই লাখ ৫২ হাজার ৪৯৪ মেট্রিক টন। অভিযোগ আছে, চাহিদার তুলনায় বেশি আমদানি থাকলেও খুচরা বাজারে এখন ছোলা অগ্নিমূল্য। এক মাস আগের যা ৬৫-৭০ (মানভেদে) টাকা বিক্রি হয়েছিল বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে (২০১৬ সালের জুলাই ২০১৭ সালের এপ্রিল) ছোলা আমদানি হয় দুই লাখ ৫২ হাজার ৪৯৪ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ২০১৬ সালের জুলাই মাসে দুই হাজার ৭০২ টন, আগস্টে তিন হাজার ৫৭৭ মেট্রিক টন, সেপ্টেম্বরে এক হাজার ৩২৪ মেট্রিক টন, অক্টোবরে ৮০ হাজার ৫০৪ মেট্রিক টন, নভেম্বরে তিন হাজার ৪০৪ মেট্রিক টন, ডিসেম্বরে ২১ হাজার ৬৬৩ মেট্রিক টন, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ২৭ হাজার ৯৪৩ মেট্রিক টন, ফেব্রুয়ারিতে ১০ হাজার ৪৪ মেট্রিক টন, মার্চে ১৮ হাজার ৫৩৫ মেট্রিক টন এবং এপ্রিলে ৮২ হাজার ৭৯৮ মেট্রিক টন ছোলা আমদানি হয়েছে। তার পরও চট্টগ্রামে ছোলার অগ্নিমূল্য।
ক্রেতাদের অভিযোগ, সরকারিভাবে বাজার মনিটরিং এর অভাব, কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর অতি মুনাফার লোভ, রমজান কেন্দ্রিক অসাধু ব্যবসায়ীর একটি সক্রিয় চক্রের তৎপরতা এবং খুচরা বাজার তদারকির বাইরে থাকায় রমজানের অতি প্রয়োজনীয় পণ্য সমুহের মূল্যে ঘোড়দৌঁড় চলে। গতকালও চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হয় ৯০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে আমদানিকারক কম থাকলেও এখন বেড়েছে। তবে তাদের মধ্যে কোন সমন্বয় নেই। যার যখন ইচ্ছা আমদানি করছে। ফলে বাজারে চাহিদার চেয়ে মজুদ বেড়েছে। ক্যাবের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, প্রশাসনের বেধে দেওয়া মূল্য বাস্তবায়ন করবেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু খুচরা বাজারে যদি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি বিক্রি হয় তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের মনিটরিং টিম কাজ করার কথা। আমরা আশা করব প্রশাসন এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
চট্টগ্রাম ডাল মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম মহিউদ্দিন বলেন, খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইয়ের আমদানিকারকরা ৩০ শতাংশ পণ্যের আমদানি করে। তবে এখন আমদানিকারকদের মধ্যে সমন্বয় নেই। আগে খাতুনগঞ্জে ২০-২৫ জন আমদানিকারক ছিল। এখন সারা দেশে শত শত আমদানিকারক। পণ্যের দাম বাড়লে সবাই এলসি খুলে বসে। ফলে এবার বেশি মাত্রায় আমদানি হয়েছে। পাইকারি ও খুচরা বাজারে পণ্যের মূল্যের ব্যবধান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরা বাজারে ছোলার দাম বেশি- এটি সত্য। তবে এর জন্য সমন্বয়হীনতা এবং বাজার তদারকি না থাকাটা একটি কারণ।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন গত ৪ মে ব্যবসায়ী-প্রশাসন বৈঠকে রমজানে সাধারণ মানের ছোলা পাইকারিতে প্রতি কেজি ৭৫ টাকা এবং খুচরায় ৮০ টাকা, ভালো মানের অস্ট্রেলিয়ান ছোলা পাইকারিতে ৮০ ও খুচরায় সর্বোচ্চ ৮৫ টাকা দাম নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু রমজানের আগেই বাজারে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ছোলার দাম।