চট্টগ্রামে গান গেয়ে শাহাদাত হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার দিকে তিনজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি ( পিআর) কাজী মো. তারেক আজিজ।
মো. তারেক জানান, গান গেয়ে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বুধবার সিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ের নিচতলা মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে শনিবার চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানা এলাকায় খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রেখে এক যুবককে মারধরের ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, নিল রঙের গেঞ্জি এবং জিন্স প্যান্ট পড়া এক যুবক ঢুলছেন। যার দুই হাত বেঁধে রাখা হয়েছে স্টিলের পাইপের সঙ্গে। আর এই যুবককে ঘিরে গোল হয়ে কয়েকজন যুবক চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় ‘মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা’ গান গাইছে।
ভিডিওতে কয়েকজন যুবকের হাতে লাঠিও দেখা গেছে। পরে মারধর করা তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মূলত ঘটনাটি ঘটেছিল ১৩ আগস্ট। ওইসময় থানায় একেবারে পুলিশ ছিল না বললেই চলে। এটির সুযোগ নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনকারী কয়েকজন এ হামলায় অংশ নেয় বলে জানা গেছে।
আর এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসে শনিবার। এরপরই ভিডিওটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
বেঁধে মারধর করা যুবকের নাম মো. শাহাদাত হোসেন (২৪)। তিনি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানার পাঁচবাড়িয়া ইউনিয়নের নদনা গ্রামের মিয়া জান ভুঁইয়া বাড়ির মৃত মোহাম্মদ হারুনের ছেলে। তিনি স্ত্রী শারমিন আক্তারের সঙ্গে নগরের কোতোয়ালী থানার বিআরটিসি এলাকার বয়লার কলোনিতে থাকতেন। তাকে চট্টগ্রাম নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকায় মারধর করা হয়।
গত ১৪ আগস্ট রাতে নগরে প্রবর্তক এলাকা থেকে পুলিশ শাহাদাতের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শাহাদাতের চাচা মো. হারুন বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৩ আগস্ট চট্টগ্রামের বয়লার কলোনির বাসা থেকে কাজের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন শাহাদাত।
কিন্তু সারাদিন বাসায় না ফেরায় রাতে ফোন করে শাহাদাতের নম্বর বন্ধ পান তার স্ত্রী। এরপর দিন প্রবর্তক মোড়ের অদূরে বদনাশাহ মিয়া (রহ.) মাজারের বিপরীতে সড়কের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। তার চাচা ফেসবুকে লাশের ছবি দেখে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে এসে লাশ শনাক্ত করেন।
তবে মারধরের শিকার ব্যক্তি যে শাহাদাত, সেটি প্রকাশ্যে এসেছে শনিবার। তার স্ত্রী ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে শনাক্ত করেন মার খাওয়া ব্যক্তি শাহাদাত।