নিউজ ডেস্ক:
বঙ্গোপসাগরে মংলা বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় কয়লা বোঝাই একটি বিদেশি জাহাজে দেশি-বিদেশি ৪৫ নাবিক খাদ্য ও পানি সংকটে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকজন নাবিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সমুদ্র উত্তাল থাকায় বিদেশি ওই জাহাজটিতে খাবার পানি ও খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
ইতোমধ্যে নাবিকদের জন্য খাদ্য ও কয়লা খালাস করতে যাওয়া চারটি লাইটার কার্গো সাগর উত্তাল থাকায় জাহাজটির সাথে ভিড়তে না পেরে ফিরে এসেছে।
মংলা বন্দর সূত্র জানায়, পানামা পতাকাবাহী এমভি ‘স্টার অপায়া’ নামের বিদেশি জাহাজটি প্রায় ২৭ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ১২ মার্চ বঙ্গোপসাগরের মংলা বন্দরের ফেয়ারওয়ের শেষ বয়া এলাকায় নোঙ্গর করে। গত ২৪ মার্চ জাহাজটির কয়লা খালাস কাজে শ্রমিক নিয়োগসহ দু’টি লাইটার জাহাজ পাঠানো হয়। প্রথম পর্যায়ে ওই দু’টি লাইটার জাহাজে করে ২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন কয়লা খালাস করা হয়। পরে জাহাজে থাকা শ্রমিকের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ ও খালাস কাজের জন্য আরও চারটি লাইটার জাহাজ পাঠানো হলেও সমুদ্র উত্তাল থাকায় সেগুলো মংলায় ফেরত আসে। মংলা থেকে বিদেশি ওই জাহাজে কাজ করতে যাওয়া স্থানীয় ২২ শ্রমিক-কর্মচারীর খাদ্য, পানি ও প্রয়োজনীয় মালামাল গত ২৮ মার্চ ফুরিয়ে যায়। অপরদিকে দীর্ঘ সময় সমুদ্রে অবস্থান ও বন্দর চ্যানেলে না আসতে পারায় জাহাজটিতে থাকা বিদেশি ২৩ নাবিকও পানি এবং খাদ্য সংকটে পড়েছেন।
রবিবার দুপুরে ওই জাহাজের ক্রেন ড্রাইভার মাসুম মোবাইল ফোনে জানান, বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজটিতে ২৩ জন ক্রু রয়েছে। তাদেরও প্রয়োজনীয় রসদ না থাকায় শ্রমিকদের খাদ্য সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়ছে। এ অবস্থায় অনাহারে থেকে দেশীয় তিন ক্রেন ড্রাইভার মোয়াজ্জেম, বাদশা মিয়া ও তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
ওই জাহাজটিতে শ্রমিক নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা এজেন্সির মংলাস্থ ম্যানেজার হাবিবুর রহমান বলেন, বিদেশি জাহাজটিতে থাকা দেশীয় শ্রমিকদের জন্য বিকল্প পন্থায় বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য এবং প্রয়োজনীয় রসদ পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট কসমস শিপিং লাইন্সের খুলনাস্থ ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম বলেন, এমভি স্টার অপায়া নামের কয়লা বোঝাই জাহাজটি গত ২০ মার্চ মংলা বন্দরের হাড়বাড়িয়ায় প্রবেশ করার কথা ছিল। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে পণ্য খালাস করে ড্রাফ কমাতে না পারায় বন্দর চ্যানেলে আসতে পারেনি। যে কারণে কয়লা বোঝাই জাহাজটিকে গভীর সমুদ্রে দীর্ঘ সময় অবস্থায় করতে হচ্ছে। এতে দেশীয় শ্রমিক ও বিদেশি নাবিকদের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত ১৫টি লাইটার জাহাজ পাঠানো হলেও সমুদ্র উত্তাল থাকায় সেগুলো মংলায় ফিরে এসেছে। তবে সোমবার সকালে প্রয়োজনীয় রসদ নিয়ে আরও একটি লাইটার জাহাজ পাঠানোর চেষ্টা করা হবে।