বুধবার, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
বুধবার, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫

ক্ষমার বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক !

নিউজ ডেস্ক:

পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ কানাডার আদালতে খারিজ হয়ে যাবার পর বাংলাদেশের আইনমন্ত্রীসহ সরকারের অনেক নেতা বিশ্ব ব্যাংককে দিয়ে ক্ষমা চাওয়ানোর দাবি জানিয়েছেন। আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বিশ্ব ব্যাংকের সদর দফতর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা প্রসঙ্গটি কৌশলে এড়িয়ে গেছেন।

বিশ্বব্যাংকের সদর দফতর বাংলাদেশের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কী ভাবছে- জানতে চাইলে রবিবার সংস্থাটির প্রেস সেক্রেটারির পক্ষে সিনিয়র কম্যুনিকেশন্স ডাইরেক্টর ইয়োকো কব্যেশি ঢাকায় তাদের কান্ট্রি ডিরেক্টরের দেয়া বিবৃতি প্রদর্শন করেন। শনিবার প্রদত্ত ওই বিবৃতিতে ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গে কিছুই নেই।

উল্লেখ্য, কানাডীয় কোম্পানি এসএনসি লাভালিনকে পরামর্শক হিসেবে প্রকল্পে কাজ দেয়ার বিনিময়ে ঘুষ লেনদেনের একটি অভিযোগ তুলেছিল বিশ্বব্যাংক। যা গালগল্প বলে উড়িয়ে দিয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রায় দিয়েছেন কানাডার আদালত।

রায় প্রকাশিত হওয়ার পরই আওয়ামী লীগ নেতাসহ বাংলাদেশ সরকারের একাধিক মন্ত্রী বিশ্ব ব্যাংককে দিয়ে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ানোর দাবি তোলেন।

ঢাকাস্থ বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টরের সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, ব্যাংকের অর্থায়নে চলমান প্রকল্পে দুর্নীতি ও প্রতারণার যে অভিযোগ উঠেছে, তাকে বিশ্বব্যাংক খুবই গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করেছে। বিশ্বব্যাংকের তদন্ত সমাপ্ত হওয়ার পর কর্তৃপক্ষের (বাংলাদেশ) সঙ্গে তা নিয়ে মতবিনিময় করা হবে। দেখা হবে সেখানে রাষ্ট্রীয় আইনের বরখেলাপ হয়েছে কিনা। এ ব্যাপারে কি করণীয় তাও বিশ্বব্যাংকের ‘আন্তর্জাতিক বার্ষিক রিপোর্টে’ উল্লেখ রয়েছে। সবসময়ই সবকিছু করা হয় প্রতিটি রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারকদের সাথে আলোচনাক্রমে।

কানাডার আদালত অভিযোগ নাকচ করে দেয় ১০ ফেব্রুয়ারি। আর বিশ্ব ব্যাংকের ‘আন্তর্জাতিক বার্ষিক রিপোর্ট’ প্রকাশিত হয়েছে কয়েক সপ্তাহ আগে। তাহলে সেখানে সর্বশেষ পরিস্থিতির প্রতিফলন কীভাবে ঘটবে? বিশ্বব্যাংকের এক কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে ‘সর্বশেষ পরিস্থিতি’র জন্যে কিছু সময় অপেক্ষার আহবান জানান। উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে সৃষ্ট ক্ষোভ প্রশমনে ইতিমধ্যেই নীতি-নির্দ্ধারকরা অনানুষ্ঠানিক কথা-বার্তা শুরুর পরিবেশ খুঁজছেন বলেও উল্লেখ করেন ওই  কর্মকর্তা। অর্থাৎ ক্ষমা প্রার্থণার বিষয়টিকে তারা কৌশলে এড়িয়ে চলতে চাচ্ছেন।

২০০১ সালের ৪ জুলাই পদ্মাসেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২০০৯ সালে পদ্মাসেতুর জন্য সরকার ডিজাইনার নিয়োগ করা হয়। ২০১১ সালে সরকার বিশ্বব্যাংকের সাথে ঋণচুক্তিতে আবদ্ধ হয় বাংলাদেশ। ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ১.২ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রত্যাহার করে নেয়। পাশাপাশি জাইকাসহ অন্য দাতা সংস্থাগুলোও সরে দাঁড়ায়। দুর্নীতির অভিযোগ আনায় অন্যায়ভাবে সেসময় তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়, পাশাপাশি যোগাযোগ সচিবসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular