নিউজ ডেস্ক:
সম্প্রতি ফ্রান্সের ন্যাশনাল ফ্রন্ট দলের সভানেত্রী মেরিন লো পেন জানিয়েছেন, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারলে মুসলমানরা যাতে ফ্রান্সে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যবস্থা নেবেন তিনি। তিনি জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতোই অভিবাসী বিরোধী অবস্থানের অনুকরণে ফ্রান্সে অভিবাসীদের প্রবেশের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করবেন।
জানা যায়, ফ্রান্সে আগামী ২৩ এপ্রিল পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই নির্বাচনের অন্যতম প্রার্থী লো পেন বলেন, ইউরোপীয় দেশগুলো ইউরোর কারণে মরতে বসেছে। অন্যদিকে জার্মানি এখান থেকে লাভবান হচ্ছে। সেই বিষয়েও ক্ষমতায় আসলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি তার। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি এক নির্দেশে সাত মুসলিম দেশের নাগরিকদের আমেরিকাতে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। কিন্তু এই আদেশ বাস্তব করতে গিয়ে বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন তিনি।
ফ্রান্সের উগ্র ডানপন্থি দল ন্যাশনাল ফ্রন্টের নেতা লো পেনের নির্বাচনি শ্লোগান হচ্ছে ‘ওনলি ফ্রান্স’ বা ‘শুধুমাত্র ফ্রান্স’। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী’ আইনগুলো থেকে ফ্রান্সকে বের করে আনবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে তিনি ব্রেক্সিট- এর আদলে ফ্রেক্সিট পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন; যার মাধ্যমে তিনি ফ্রান্সকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ থেকে বের করে আনবেন।
ন্যাশনাল ফ্রন্ট নেত্রীর এসব পরিকল্পনার ব্যাপারে ফ্রান্সের অন্যান্য দল ও ইইউ’তে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। লো পেনের পরিকল্পনার বিরোধীরা বলেছেন, তার পরিকল্পনাগুলো মানবাধিকার ও বহু জাতীয়তাবাদের মতো ইউরোপীয় মূল্যবোধের পরিপন্থি। বিশেষ করে ইউরোপের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যখন অনেক বেশি জনশক্তি প্রয়োজন তখন অভিবাসী প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা এই মহাদেশের জন্য মস্ত বড় ক্ষতি বয়ে আনবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপীয় নেতাদের অভিবাসী ও মুসলিম বিদ্বেষী নীতি এই মহাদেশে ইসলাম আতঙ্ক ছড়িয়ে দেবে। এর ফলে ইউরোপ জুড়ে অভিবাসী নাগরিক বিশেষ করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংস হামলার ঘটনা বেড়ে যেতে পারে। উগ্র ডানপন্থি নেতারা এমন সময় মুসলমানদের বিরুদ্ধে জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন যখন শান্তির ধর্ম ইসলামের অনুসারী মুসলমানরা শত শত বছর ধরে দেশে দেশে তাদের অমুসলিম প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে এসেছেন। সূত্র: কলকাতা টুয়েন্টিফোর সেভেন।