অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের আগেও সত্য প্রত্যাখ্যান করেছিল নুহের সম্প্রদায়, রাস্স ও সামুদ সম্প্রদায়, আদ ফিরাউন ও লুত সম্প্রদায় এবং আয়কার অধিবাসী ও তুব্বা সম্প্রদায়; তারা সবাই রাসুলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল, ফলে তাদের ওপর আমার শাস্তি আপতিত হয়েছে।’ (সুরা কাফ, আয়াত : ১২-১৪)
আসহাবুর রাসেসর পরিচয়
পবিত্র কোরআনে রাসেসর অধিবাসীদের পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত কিছুই বর্ণনা করা হয়নি। শুধু এতটুকু বলা হয়েছে যে, তারা ছিল আল্লাহর অবাধ্য এক জাতি। ফলে তাদের পরিচয় নির্ধারণে পরবর্তী যুগের গবেষকদের ভেতর মতভিন্নতা দেখা দিয়েছে। কোরআনের ব্যাখ্যাকাররা এই বিষয়ে একমত হয়েছেন যে, রাস্স অর্থ পানির কূপ। তাই তারা কূপের অর্থটি ধারণ করে বিভিন্ন স্থানকে আসহাবুর রাসেসর আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত করার প্রয়াস পেয়েছেন।
আসহাবুর রাসেসর আবাসস্থল নিয়ে প্রসিদ্ধ কয়েকটি মতামত তুলে ধরা হলো—
১. আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, রাস্স ছিল প্রাচীন আরবের ইয়ামামা অঞ্চলের একটি অঞ্চল। বর্তমানে তা ওয়াদিউর রুম নামে পরিচিত। এই অঞ্চলের মানুষ তাদের কাছে প্রেরিত নবীকে কূপে আটকে রেখেছিল বলে তাদেরকে আসহাবুর রাস্স নামে অবহিত করা হয়। তাদের কাছে প্রেরিত নবীর নাম ছিল হানজালা ইবনে সিফওয়ান (আ.)।
২. একদল গবেষকের মতে, রাসেসর অধিবাসীরা আধুনিক আজারবাইজান অঞ্চলে বসবাস করে। আর রাস্স অর্থ জলাশয়, যার দ্বারা আরাস নদী উদ্দেশ্য। আরাস নদী তুরস্ক, আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে প্রবাহিত।
৪. কারো কারো মতে, রাস্স শব্দ থেকে রুশ শব্দের উত্পত্তি এবং রুশ থেকে রাশিয়ার উদ্ভব। তাই রাসেসর অধিবাসী দ্বারা রাশিয়ার কোনো জনগোষ্ঠিকে বোঝানো হয়েছে।
৫. আল্লামা ইবনে জারির তাবারি (রহ.) বলেছেন, রাসেসর অধিবাসীরা ছিল সামুদ জাতিরই একটি শাখা গোষ্ঠি। তারা সামুদ জনপদের একটি গ্রামে বসবাস করত। তাদের কাছে হুজলাহ ইবনে সাফওয়ান (আ.) নামে একজন নবীকে পাঠানো হয়। কিন্তু তারা তাঁকে অস্বীকার করে এবং হত্যা করে। হত্যার পর তারা তাঁর দেহ কূপে নিক্ষেপ করে।
আসহাবুর রাসেসর পাপের বর্ণনা
তথ্যঋণ : কাসাসুল আম্বিয়া, তাফসিরে ইবনে কাসির, (বঙ্গানুবাদ) আল কোরআনুল কারীম, ইসলামিক স্টোরিজ ডটকম ও উইকিপিডিয়া