নিউজ ডেস্ক:
সরকারকে হঠানোর জন্য কোন কোন পথ খোঁজা হচ্ছে, কারা কারা ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নাড়াচ্ছেন, সব আমরা জানি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে কী লাফালাফি ? গর্ত থেকে বেরিয়ে এসে ঘরে বসে প্রেস ব্রিফিং, এখন লাফালাফি করে বুঝতে পেরেছে, ক্ষমতার রঙিন খোয়াব কর্পূরের মতো উড়ে গেছে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপির এক নেতা বললেন যে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে একটা উপকার হয়েছে। আর একটা উপকার হয় যদি এই অবৈধ সংসদ ভেঙে দেয়? এটা হাফিজ সাহেবের মামা বাড়ির আবদার। এরপরে আরেক কাঠি এগিয়ে গিয়ে বলবে, রায় দিয়ে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসার আয়োজন করেন।
বিএনপির আন্দোলন করার মুরোদ নেই ,দাবি করে কাদের বলেন, আমরা সব জানি, কোথায় কারা যাচ্ছে, কী আলাপ হচ্ছে, লন্ডনের খবর, দুবাইয়ের খবর, ব্যাংককের খবর, কী কী শলা-পরামর্শ হচ্ছে। কোন কোন পথ খোঁজা হচ্ছে শেখ হাসিনার সরকারকে হঠানোর জন্য। তথ্য প্রবাহের যুগে আমরা সব জানি। কারা কারা এই ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নাড়াচ্ছেন সব খবর আমাদের কাছে আছে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি বদলায়নি, তারা বদলাবে না। যদি তারা বদলাতো তাহলে ২১ আগস্ট যারা খুনের সঙ্গে জড়িত তাদের নিয়ে বিএনপির সংগঠনের কমিটিতে বড় বড় পদে যুক্ত করত না। ইতিহাসের সব ময়লা-আবর্জনা, রক্তের দাগ, তারা ধারণ করে আছে। তাদের হাতে রক্তের দাগ, গণতন্ত্র তাদের কাম্য নয়। তারা ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যেতে চায়। এটা তাদের ইতিহাস।
যুবলীগ নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অপশক্তিকে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০১ সালের পুনরাবৃত্তি বাংলাদেশে আর হতে দেব না। বিএনপি আবারও ২০০১ সালের দুঃস্বপ্ন দেখছে। ২০০১ সালের নির্বাচন পরিকল্পিত, ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচন ছিল। এবার নির্বাচন হবে পার্টিসেপিটরি, ইনক্লুসিভ এবং ফেয়ার নির্বাচন।
তিনি বলেন, ক্রেডিবেল ইলেকশনে বিএনপি আর জিততে পারবে না। এটা তারা জানেন। সেই জন্য আবারও ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, যদি জামায়াত না থাকত তাহলে ভোট কেন্দ্রেও বিএনপির লোক থাকত না। তাই এই জামায়াতকে নিয়ে তারা আবারও সেই পুরনো খেলায় মেতে উঠেছে। আমাদের চোখ কান খোলা রাখতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে।
বঙ্গবন্ধু এখন শোক নয়, বঙ্গবন্ধু শক্তি। এই শক্তিকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এবার ভুয়া জন্মদিনে কেক কাটার উৎসব ছিল না। বঙ্গবন্ধু প্রেমী জনতার রুদ্ধরোষ ও রোষানলের মুখে এই কেক কাটার উৎসব পণ্ড হয়ে গেছে।
বিষয়টি আজ এমন জায়গায় যে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় বিএনপির উপজেলা জয়েন সেক্রেটারি বঙ্গবন্ধুর প্রতি আবেগ ও ভালবাসা থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি। তিনি প্রকাশ্যেই বলেছেন, আমাদের নেত্রী (বিএনপি) আজকের এই জন্মদিনের কেক কাটার উৎসবটি এক দিন আগে, এক দিন পরে করলে কী হয়? কিন্তু সেই অপরাধে উপজেলার ওই নেতাকে তার সদস্যপদ স্থগিত এবং শোকজ করেছে।
এই ভুয়া জন্মদিন আমাদের হৃদয়ে আঘাত করার জন্য, অনুভূতিকে আঘাত করার জন্য। আমাদের উপহাস করার জন্য দাবি করে তিনি বলেন, যারা কেক কাটে, তাদের সঙ্গে আমরা সংলাপে বসব? আমাদের হৃদয়ে যারা আঘাত করে, অনুভূতিকে যারা আঘাত করে তাদের সঙ্গে আমরা সংলাপ করব? বঙ্গবন্ধুকে তারা বিদ্বেষের চোখে দেখে। শেখ হাসিনাকেও বিদ্বেষের চোখে দেখে। তাদের এখন মনে বড় কষ্ট, এবার ১৫ আগস্টে আরেকটা ২১ আগস্ট কেন হল না, আত্মঘাতী বোমা হামলায় কেন শেখ হাসিনা মরলেন না !
যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী, সহীদ সেরনিয়াবাত, ফারুক হোসেন, আতাউর রহমান আতা, দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইর চৌধুরী সম্রাট, উত্তরের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিল, সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন প্রমুখ।