নিউজ ডেস্ক:
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রায় এক কোটি বাংলাদেশী একটু সচ্ছ জীবিকা নির্বাহে প্রবাস জীবন অতিবাহিত করছে। এদের অনেকে অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে পাড়ি দেয় প্রবাসে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সমুহে অদক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা অনেক।
অনেক অদক্ষ প্রবাসী নিজ কোম্পানির কর্মের পাশাপাশি একটু বাড়তি আয়ের আশায় পার্ট টাইম কাজ করে থাকে। দীর্ঘদিন যারা বিদেশে আছেন তাদের অনেকে পার্ট টাইম কাজকে নিজ মেধা আর পরিশ্রমের কারণে আয়ত্তে নিয়ে একজন দক্ষ কারিগড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে উঠেন। এমনই একজন কুমিল্লা জেলার মুরাদ নগর থানার হাটাস গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস এর সন্তান মাসুম।
মাসুম সোনার হরিনের খুঁজে ১৯৯৬ সালে আল আফরাজ নামে একটি কোম্পানিতে (ক্লিনিং) ছাফাই কাজের কন্টাকে কুয়েত আসে। কোম্পানিতে আট ঘন্টা কাজের সময় নির্ধান থাকলেও ১১ থেকে ১২ ঘন্টা সময় চলে যায় কোম্পানির কাজে। মাসিক বেতন ছিলো ১৮ কুয়েতি দিনার যা বিভিন্ন অজুহাতে কেটে ১৫ কুয়েতি দিনার বেতন পেতেন। এরই ফাঁকে একটি মোবাইলের দোকানে পার্টটাইম কাজ ভাগ্যে জোটে।
নিজ মেধাকে কাজে লাগিয়ে এরই মধ্যে আয়ত্ত করে ফেলেন মোবাইল মেরামত এর কাজ। দীর্ঘ আট বছর কোম্পানির কাজের পাশাপাশি মোবাইলের দোকানে পার্টটাইম কাজ করে নিজেই একজন অদক্ষ শ্রমিক থেকে দক্ষ শ্রমিক হয়ে উঠেন। জমানো সঞ্চয় আর বন্ধুদের আর্থিক সহযোগিতায় একটি দোকানের মালিক বনে যান তিনি। দীর্ঘ প্রায় বিশ বছর মোবাইল মেরামতের কাজ করে বর্তমানে একজন দক্ষ কারিগর হয়ে উঠেছেন তিনি। কুয়েত সিটির প্রাণকেন্দ্র মুরগাবে সুক আল ওয়াতানিয়া তার দোকান।
এখানে মোবাইলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বিক্রী সহ নামিদামী ব্রান্ডের মোবাইলের মেরামত করা হয়। কুয়েতে বাংলাদেশী কমিউনিটির অনেকে মাসুমকে মোবাইল ইঞ্জিনিয়ার বলে ডাকে। মাসুম বলেন, সকল শ্রমিকদেরই নিজ কোম্পানির কাজের পাশাপাশি সুযোগ বুঝে যে কোন একটি টেকনিক্যাল কাজে দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন এতে নিজেরই বেশি লাভ হয়।
কুয়েতে প্রায় তিন লাখের মত প্রবাসী আছেন। এই প্রবাসীদের বড় একটি অংশ দীর্ঘদিন কুয়েতে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে অনেকে নিজ মেধা, পরিশ্রম আর ভাগ্যের কারণে আজ প্রতিষ্ঠিত।