প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে এই খুনি হাসিনা সরকারের আমলে ছোট বড় এমন কোনো জায়গা নেয়, যেখানে দুর্নীতি হয়নি। সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি, সকল ভালো কিছুকে গ্রাস করে ফেলেছিল। রাষ্ট্রীয় যত প্রতিষ্ঠান আছে, সব আজ ধংসের মুখে। সারা দেশের ছাত্ররা রাষ্ট্র রক্ষায় যখনই রাস্তায় নেমে পড়েছিল, ঠিক তখন এই খুনি হাসিনা রাষ্ট্র রক্ষায় রাস্তায় নামা ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়ে শত শত ছাত্র-ছাত্রীদের হত্যা করেছে। তবুও ছাত্র-ছাত্রীসহ অভিভাবকদের আন্দোলন থামাতে পারেনি। ছাত্রদের জীবনের বিনিময়ে ফিরে এসেছে এই দেশে বাক-স্বাধীনতা, পতন হয়েছে স্বৈরাচারী শাসকের।
তিনি বলেন, এই খুনি হাসিনা সরকারের আমলে গায়েবি মামলা দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর যে দমন-পীড়ন চালিয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। আইনশৃঙ্খলার যে অবনতি ঘটেছিল, তার অবসান ঘটেছে। এই খুনি হাসিনা পালিয়ে যাবার পর মানুষ যে বাক-স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে, তা রক্ষায় আমাদের সকলকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা সঠিক রাখতে হলে পুলিশ বাহিনীকে সহায়তা করতে হবে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে হবে। আপনারা যারা বলছেন আপনারা নির্যাতিত, যদি আপনারা সত্যিই নির্যাতিত হন, তবে নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ দেবেন। মনে রাখবেন, কেউ আইনের বাইরে নয়। মিথ্যা মামলা দিয়ে কোনো মানুষকে হয়রানি করা যাবে না। এই খুনি হাসিনার নামে সব অপকর্মের জন্য মামলা হবে। এখনই রুখে দাঁড়ানোর সময়। কাউকে ভয় পাবার দরকার নেই। সকলেই সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। যদি আপনারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ান, তাহলে এই ঘুনে ধরা সমাজকে সংস্কার করা যাবে না। সমাজ থেকে দুর্নীতিবাজদের দূর করা যাবে না।
বিএনপি নেতা শরীফ বলেন, এই সমাজকে সংস্কার করতে হলে আপনাদেরকেই সচেতন হতে হবে। তা নাহলে কোনোভাবেই সমাজের সংস্কার করা সম্ভব হবে না। আমরা কোনো দুর্নীতি চায় না, আমরা কোনো গায়েবি মামলা চাই না। আমরা টাকা দিয়ে টিসিবি, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা চাই না। সে জন্য আমি আপনাদেরকে বিনয়ের সাথে আহ্বান করব, আপনারা কোনো ভয় পাবেন না। আপনারা যারা নির্যাতিত হয়েছেন, আপনারা মামলা করেন। আপনারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে যেতে পিছুপা হবেন না। আপনারা এগিয়ে না গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আপনাদের সহায়তা করতে পারবে না। আপনারা এগিয়ে যান, তারা আপনাদের সহায়তা করবে, তারা দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনবে। মনে রাখবেন, অত্যাচারীরা ক্ষণস্থায়ী, চিরস্থায়ী নয়। আমরা আইনের সুশাসন চাই, আমরা আইনের সঠিক ব্যবহার চাই।
তিনি আরও বলেন, আপনারা অতিউৎসাহী হয়ে ভুল কোনো তথ্য দিয়ে কারো নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন না। সঠিক তথ্য-প্রমাণ দিয়ে সঠিক মামলা দেবেন। আপনারা খেয়াল রাখবেন, আওয়ামী লীগের যেসব কাজের জন্য মানুষ তাদের ঘৃণা করে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে, আপনারা যেন সেই সব কাজ করবেন না। তিনি দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা যদি কেউ এই আওয়ামী লীগের অত্যাচারীদের কাউকে কোনোভাবে বর্তমানে শেল্টার দিয়ে থাকেন, তবে তা বন্ধ করুন। কোনো স্বার্থের বিনিময়ে যদি আপনারা ওই অত্যাচারী সরকারের কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন, তবে কিন্তু এই জাতীয়তাবাদী দলে আপনার নিজের স্থান থাকবে না।
বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, ছড়িয়ে ছিটিয়ে না থেকে সকলে মূল দলে ফিরে আসেন, স্রোতে গা ভাসিয়েন না। পরে কিন্তু পস্তাতে হবে। তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দলে অনুপ্রবেশকারীদের সাথে নিয়ে যারা দলের ভেতর বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে, তারা সাবধান হয়ে যান। কেউ কিন্তু ছাড় পাবেন না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলে দিয়েছেন, যে নেতাই দলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে, সে যতো শক্তিশালীই হোক না কেন দলে তার কোনো স্থান হবে না। তাই বলব, আপনারা কেউ ভয় পাবেন না। আপনারা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেন।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আক্তার, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল হক রোকন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সদস্য ইমদাদুল হক ডাবু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কুতুবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিণ্টু, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ওল্টু, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, চুয়াডাঙ্গা জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক নাজমুল আরেফিন কিরণ।
কুমারী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিকের উপস্থাপনায় বক্তব্য দেন কুমারী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান সণ্টু, উপজেলা যুবদল নেতা ও সাবেক ছাত্রদল নেতা পিয়াল মাহমুদ সাদ্দাম, উপজেলা যুবদল নেতা আজমির হোসেন, যুবদল নেতা মহিউদ্দিন, ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হাসিব মোল্লা, ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুকচান আলী, ৮ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি সুজন আলী ও কুমারী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আওয়াল হোসেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কালিদাসপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন লালন, উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী জাহাঙ্গীর আলম বাবু, পৌর যুবদলের সদস্যসচিব সাইফুদ্দিন কনক, পৌর যুবদলে যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার আব্দুল কাদের, হাফিজুর রহমান, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আতিক হাসনাত রিংকু, সদস্যসচিব মাহমুদুল হক তন্ময়সহ আলমডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপি, কুমারী ইউনিয়ন বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।