নিউজ ডেস্ক:
জীবন মানেই পথচলা। মানব জীবন এই পথচলার মধ্য দিয়েই কেটে যায়। এই চলার পথের পারিপার্শ্বিকতা নানা অভিজ্ঞতা আমাদের নতুন মানুষ করে তোলে। জীবনের নানা পর্বের নানা অভিজ্ঞতা। প্রতিটিই নতুন জার্নি। আবার গ্রামের সেই মানুষটি কিন্তু শহরে এসে নতুন মানুষে পরিণত হয়। নতুন পরিবেশ, পরিস্থিতি তাকে নতুন মাত্রা দেয়। সেই বদলে যাওয়াটাও আরেক জার্নি। মানুষের জীবনের এসব নানা পর্ব উঠে এসেছে উত্তরা গ্যালারি কায়ায় শুরু হওয়া শিল্পী রণজিত্ দাসের ‘জার্নি এন্ড ইমেজেস’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে।
গ্রামের ফেলে আসা দিন, ছেলেবেলাকে কি ভোলা সম্ভব! মায়ের মুখ, তরুণীর চুল বাঁধা, দিগন্তবিস্তৃত মাঠ, ছাগলছানা পাখি হাতে গ্রাম্য মেয়ে, মেয়ের পাশে দাঁড়িয়ে বেড়ার ফাঁক দিয়ে চাঁদ দেখার স্মৃতি সবার জীবনে টাটকা। এসব ছবিতে শিল্পী স্মৃতিকাতর। সেই অকৃত্রিম জীবনের কথাই ফুটে উঠেছে শিল্পীর ক্যানভাসে।
শিল্পী রণজিত্ দাস নিভৃতে অনবরত কাজ করে চলেছেন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বাইরেও তার কাজের সুনাম ছড়িয়েছে। সাধারণত তার কাজে ভরাট কম্পোজিশন দেখা যায়। রণজিত্ দাস বলেন তবে কিছু কিছু ছবিতে তিনি অনেক স্পেস ছেড়েছেন। তিনি বললেন, গ্রামের জীবনকে ছেড়ে এসে আমরা শহুরে নাগরিক। জীবনের এই ভ্রমণ নানা রকম অভিজ্ঞতা দেয়। তা কখনো মধুময় কখনো কঠিন, রূঢ়। তবে সবকিছুই আমাদের জীবনের পথচলার অংশ।
গত শনিবার প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার আদর্শ সোয়াইকা। সম্মানিত অতিথি ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইদুজ্জামান ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন গ্যালারি কায়ার পরিচালক শিল্পী গৌতম চক্রবর্তী।
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, রণজিত্ দাস এখন নিরীক্ষাধর্মী কাজ করছে। তিনি কাজে সবসময় নিজেকে ভেঙেচুরে নতুন করে ক্যানভাসে উপস্থাপন করেন। তার ড্রয়িং, পেইন্টিং আমার ভাল লাগে। তবে রণজিতের স্টিল লাইফ ওয়ার্ক আমার খুব পছন্দের।
আদর্শ সোয়াইকা বলেন, বাংলাদেশের শিল্পীরা চিত্রকলায় খুব ভাল করছে। ভারতেও বিভিন্ন প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের শিল্পীরা সুনাম কুড়িয়েছেন।
গৌতম চক্রবর্তী বলেন, শিল্পী রণজিত্ দাস সাম্প্রতিক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ একজন শিল্পী। তার ছবিতে সমসামিয়ক জীবনের বাস্তব চিত্র যেমন পাই তেমনি মানুষের দ্বন্দ্বমুখর অবস্থানকেও দেখি।
প্রদর্শনীটি সাজানো হয়েছে ৪২টি শিল্পকর্ম দিয়ে। এর মধ্যে রয়েছে ২৭টি পেইন্টিং। সবগুলো অ্যাক্রেলিক মাধ্যমে আঁকা। ড্রইং রয়েছে ১১টি। তার মধ্যে দুইটি চারকোলে আঁকা। ৪টি রয়েছে তেলরঙের চিত্রকর্ম। রণজিত্ দাস কবিতাও লেখেন। কবিতার চরণ ব্যবহার করেছেন কয়েক চিত্রকর্মে।
প্রদর্শনী চলবে ২৫ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল এগারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে।