নিউজ ডেস্ক:
নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটিতে বিএনপি প্রাক্তন বিচারপতি কে এম হাসানের নাম সুপারিশ করেছে বলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে দাবি করেছেন, সেটিকে ‘সর্বৈব মিথ্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন ‘তাহলে কী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ওবায়দুল কাদের সাহেব ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগসাজশ আছে? তিনি (রাষ্ট্রপতি) কী আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটি করছেন?’
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক আলোচনায় এ কথা বলেন তিনি।‘লেখক, প্রকাশক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদদের নিয়ে দ্বিতীয় গ্রন্থ আড্ডা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ‘জিয়া স্মৃতি পাঠাগার ও জাতীয়তাবাদী প্রকাশনা সংস্থা।
এর আগে দুপুরে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি রাষ্ট্রপতির কাছে কে এম হাসানের নাম প্রস্তাব করেছেন। সেই হাসান সাহেব যিনি বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। কোনটা নিরপেক্ষ! এটা কী নিরপেক্ষ?’
ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন যে, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় আমরা (বিএনপি) নাকি সার্চ কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে বিচারপতি কে এম হাসানের নাম প্রস্তাব করে এসেছি। এটা সর্বৈব মিথ্যা। আমার প্রশ্ন তাহলে কী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ওবায়দুল কাদের সাহেব ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগসাজশ আছে? তাহলে কী রাষ্ট্রপতি তাদের (আওয়ামী লীগ) সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটি গঠন করবেন? তাই যদি হয়, তাহলে সার্চ কমিটি গঠনের প্রয়োজন নেই।’
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলছেন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি (রাষ্ট্রপতি) সার্চ কমিটি গঠন করবেন কী না-তাও ওবায়দুল কাদের সাহেবের কাছ থেকে চাই।’
ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য প্রত্যাহার করা উচিত মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই ধরনের সার্চ কমিটি দেশের মানুষ কখনোই মেনে নেবে না।’
দেশে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চলছে এমন অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘আক্রমণ নেমে এসেছে জাতীয়তাবাদী দর্শনের ওপর, বাংলাদেশের কৃষ্টি ও স্বকীয়তার ওপর। প্রকাশকরা বলেছেন, তাদেরকে বই ছাপাতে দেওয়া হয় না। যদি জাতীয়তাবাদের ওপর লেখকদের কোনো বই থাকে তা ছাপতে দেওয়া হয় না। বরং ভয় দেখানো হয়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখন একুশে বই মেলায় আওয়ামী লীগের চিন্তা ও মতের বাইরে কোনো কিছু থাকলে তা হয়ে যায় দেশবিরোধী, সেটা প্রকাশ করা যাবে না। পাকিস্তানী হানাদারদের সঙ্গে এদের (আওয়ামী লীগ) পার্থক্য কোথায়? তারাও কথা বলতে দিত না, এরাও বলতে দেয় না।’
নেতা-কর্মীদের বেশি বেশি বই পড়ার পরামর্শ দেন বিএনপির এই নেতা।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জিয়া স্মৃতি পাঠাগারে সভাপতি আবদুস সালামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুকোমল বড়ুয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কবি আবদুল হাই শিকদার, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান প্রমুখ।