হাবিবুল ইসলাম হাবিব, টেকনাফ: পাশ্ববর্তীদেশ নাফনদী ঘেষা নাফনদী দিয়ে এবার প্লাষ্টিক জারের উপর বাঁশ দিয়ে ভেলা ভাসিয়ে টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপে আসলো মিয়ানমারের ৫২ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু।
গতকাল ৮ নভেম্বর বুধবার সকাল ৯ টার দিকে টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ পয়েন্ট দিয়ে তারা এপারে ভেসে আসে। তাদের মধ্যে ২২ শিশু, ১৭ জন নারী ও ১৩ জন পুরুষ রয়েছে। তারা সকলে রাখাইনের বুছিডং থানার বাসিন্দা। ভেলায় ভেসে আসা রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে ২ বিজিবি সদস্যদের হেফাজতে রয়েছে।
ভেসে আসা বুচিডং থানার চিংঅং গ্রামের বাসিন্দা নুরুল কবির বলেন, মিয়ানমার থেকে এপারে আসার জন্য নৌকা না পেয়ে গত চার দিন ধরে প্লাস্টিকের জারিকেন ও বাঁশ দিয়ে একটি ভেলা তৈরি করা হয়। পরে ওই ভেলায় ৫২ জনকে নিয়ে মিয়ানমারের মংডু শহরের ধংখালির বালুচর সীমান্ত থেকে দিবাগত রাত ৩ টার দিকে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দিই। বইঠা চালিয়ে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে ৮ নভেম্বর সকাল ৯ টার দিকে টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়ায় পৌঁছান। পরে ২ বিজিবির সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে। এদিকে আগত রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, গত দুই মাস যাবৎ দলে দলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটলেও গত কয়েকদিন ধরে এপার থেকে রাখাইন সীমান্তে কোন নৌকা না যাওয়ায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা জড়ো হয়ে আছে। বর্তমান সময়ে মিয়ানমার থেকে পালাতে নৌকার সংকট দেখা দেওয়ায় এপর্যন্ত প্রায় ৩৫ জন যুবক ও কিশোর প্লাষ্টিকের জার দিয়ে সাঁতার কেটে এপারে আসে। কিন্তু এবার প্রথম নারী-শিশু ও পুরুষ ভেলায় ভেসে এসেছে।
অপরদিকে গত ৭ নভেম্বর মঙ্গলবার ভোর রাতে শাহপরীরদ্বীপ, নাইট্যংপাড়া ও মহেশখালীয়া পাড়া সৈকত পয়েন্ট দিয়ে আরো ৩ শতাধিক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। মানবিক সহায়তা পুর্বক পুলিশ ও সেনারা তাদেরকে নির্দিষ্ট ক্যাম্পে পৌঁছে দিচ্ছে।
সুত্রে জানা যায়, পুরাতন রোহিঙ্গাদের সাথে মিশে এক শ্রেনীর দেশীয় দালাল রোহিঙ্গাদের বহন করে মোটা অংকের বিনিময়ে এদেশে নিয়ে আসছে। বেশীর ভাগে ক্ষেত্রে বিদেশে অবস্থান করা রোহিঙ্গারা এদেশে আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে যোগাযোগ করে কক্সবাজার থেকে ফিশিং ট্রলার কন্টাক্ট বা ভাড়া করে সাগর পথে রাখাইনের সীমান্তের ধংখালীর বালুচর থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে এসে তাদের টেকনাফ ও শামলাপুর সৈকতের যে কোন পয়েন্ট রাতের আধাঁরে নামিয়ে দিয়ে সটকে পড়ে ফিশিং ট্রলারগুলো। তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে সাগরে শিশুসহ অনেকের সলিল সমাধিও হয়েছে।