ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে সীমান্তবর্তী চারটি ইউনিয়নের ৩৪টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া গতকাল বুধবার (২১ আগস্ট) রাতভর ভারী বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়ি ঢলের কারণে আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম জানান, হাওড়া নদী ও জাজী গাঙসহ বিভিন্ন নদীর পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি রয়েছে। তা অতিক্রম করলে নতুন করে আরও এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন জানায়, বুধরাত রাত থেকে পানির পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে আখাউড়া উত্তর, দক্ষিণ, মোগড়া ও মনিয়ন্দ-এই চার ইউনিয়নের ৩৪টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। এছাড়া ওইসব এলাকার ধান ও সব্জির জমিসহ মাছের ঘের তলিয়ে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন জানান, গত মঙ্গলবার রাত থেকে আখাউড়ায় ভারী বর্ষণ শুরু হয়। বুধবার সকালে আখাউড়া স্থলবন্দরের পাশে বয়ে যাওয়া খাল দিয়ে ভারত থেকে তীব্র বেগে পানি ঢুকতে থাকে। এক পর্যায়ে স্থলবন্দর, বাউতলা, বীরচন্দ্রপুর, কালিকাপুর, বঙ্গেরচর, সাহেবনগরসহ অন্তত ৩৪টির বেশী গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। পানির তোড়ে ভেঙে যায় আব্দুল্লাহপুর এলাকার অস্থায়ী বেইলি সেতু।
এর আগে মঙ্গলবার খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধের কিছু অংশ ভেঙ্গে পানি ঢুকতে শুরু করে।
এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ঘুরে দেখতে রওনা হয়েছেন। তিনি ত্রাণ সহায়তা হিসেবে বন্যা কবলিত প্রত্যেক পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করবেন। এছাড়া দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থাও করেছে উপজেলা প্রশাসন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, পাহাড়ি ঢলে ১৯৫ হেক্টর শাক-সবজির জমি, ১২২ হেক্টর আমনের বীজতলা, ৩৪৪০ হেক্টর রোপা আমন ধানের জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে। দ্রুত পানি সরে গেলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কম। তবে পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়তে পারে। এক সপ্তাহ পর ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।