বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫

এক হাজার ৫২ কোটি ৮৯ লাখ টাকার ১১ ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন !

নিউজ ডেস্ক:

সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বৈঠকে এক হাজার ৫২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ১১টি ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মানিকগঞ্জে ৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এবং ভারতের ঝাড়খন্ড থেকে বিদ্যুৎ আমদানির প্রস্তাব রয়েছে।

গতকাল বুধবার কমিটির আহ্বায়ক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের অনুপস্থিতিতে বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে কমিটির সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মানিকগঞ্জে ৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে কনসোর্টিয়াম অব স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড ও শানফেং ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাস্তবায়ন হলে জাতীয় গ্রিডে আরো ৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি খাতে বিল্ড-ওন-অপারেট (বিওও) ভিত্তিতে নির্মিতব্য আইপিপি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে ২০ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কিনবে সরকার। এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদিত প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ টাকা ১২ পয়সা। ১২ শতাংশ ডিসকাউন্ট ফ্যাক্টর ও ১৮ দশমিক ৫০ শতাংশ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে ২০ বছরে এখান থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।

এছাড়াও বৈঠকে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারতের ঝাড়খন্ডে নির্মিতব্য ১৬০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে ২০১০ সালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান আদানি পাওয়ার লিমিটেড, ইন্ডিয়ার সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি (এমওই) স্বাক্ষর হয়েছে। সংস্থাটি থেকে ২৫ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ ক্রয়ে মোট এক লাখ ৯০ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশে প্রতি বছর বিদ্যুতের চাহিদা ১০ শতাংশ থেকে ১৪ শতাংশ হারে বাড়ছে। পাওয়ার সিস্টেম মাস্টার প্ল্যান-২০১০-এ ২০২১ সালের ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যুতের এ বর্ধিত চাহিদা পূরণের সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের এক প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। তাছাড়া, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন জ্বালানি উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কৌশলও নির্ধারণ করছে।

সূত্র জানায়, আদানি পাওয়ার লিমিটেড ভারতের ঝাড়খন্ডে নির্মিতব্য ১৬০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয়টি একটি কম্প্রিহেনসিভ টেকনো-কমার্শিয়াল প্রস্তাব ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে দাখিল করে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ২০১০ সালে বিদ্যুৎ খাত সহযোগিতা বিষয়ক একটি এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়। এর ধারাবাহিকতায় আদানি পাওয়ার লিমিটেড কর্তৃক ভারতের যে কোনো উপযুক্ত স্থানে ১৬০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে ডেডিকেটেড অল্টারনেটিভ কারেন্ট (এসি) সঞ্চালন লাইন নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশে রপ্তানিতব্য বিদ্যুৎ ক্রয়ের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের আগস্টে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বাবিউবো) ও ভারতের  আদানি পাওয়ার লিমিটেডের মধ্যে এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়। ওই এমওইউর অধীনে আদানি পাওয়ার লিমিটেড কর্তৃক ভারতের ঝাড়খন্ড থেকে বাংলাদেশ সীমানা পর্যন্ত নির্মিতব্য ডেডিকেটেড সঞ্চালন লাইনের ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করে ২০১৬ সালে একটি দরপ্রস্তাব দাখিল করে।

বৈঠকে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ প্রকল্পের অধীনে ৪৮০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ ট্রান্সফরমার ক্রয়ের দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

Similar Articles

Advertismentspot_img

Most Popular