মোঃ সুমন আলী খান ॥
হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র শেরপুর রোডের ১নং ব্রীজের নিচ দিয়ে যে খালটি শিবপাশা ঠাকুর পাড়ার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নোয়াপাড়া-শাখা বরাক নদীতে মিলিত হয়েছে। এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী শাখা বরাক নদীটি কালের আবর্তে নদীর উভয় পাড় ভুমি দখলদারদের প্রতিযোগীতার কবলে পড়ে বর্তমানে এটি যেন একটি নালায় পরিনত হয়েছে। নবীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন দিকেই প্রবাহিত বয়ে যাওয়া শাখা বরাক নদীটি চারদিকে তার নাব্যতা হারিয়ে যেন এখন নিরব কান্না করছে। তা যেন দেখার কেই নেই। মানুষ বেচেঁ থাকার জন্য সুন্দর ও সুস্থ পরিবেশ একান্ত প্রয়োজন। আর নবীগঞ্জ শহরের সেই পরিবেশই এখন দস্তুর মত হুমকির মুখে। শেরপুর সড়ক থেকে শিবপাশার দিকে গিয়ে যে খালটি শাখা বরাক নদীতে মিলিত হয়েছে সেটি শেরপুর সড়কের প্রবেশ মুখে এক শ্রেনীর দখলদার চক্র এই খাল দখল করে ইট বালুর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া আরো অনেক জায়গায় খাল দখল করে আর সরকারী লায়েক পতিত জায়গা দখল করে অনেকেই বিভিন্ন ব্যবসা করে ফাঁয়দা হাসিল করছে। এছাড়া অবশিষ্ট ভূমিতে ময়লা আবর্জনা ফেলে ও খালে মাঠি ফেলে ভরাট করে চলাচলের রাস্তা তৈরী করেছে। সাধারণ মানুষ ভয়ে এসব কাজের প্রতিবাদ করতে পাচ্ছে না। সচেতন মহল মনে করেন, উপজেলা প্রশাসনের সবোর্চ্চ কর্মকর্তা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার ভুমি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করলে একদিকে যেমন পানি নিষ্কাশনের সু-ব্যবস্থা হবে। অন্যদিকে প্রাকৃতিক পরিবেশকে ও সঠিকভাবে রক্ষা করা যাবে।
সরজমিনে গিয়ে বয়স্ক অনেকেই জানান, আজ থেকে ১২ থেকে ১৪ বছর পূর্বে যে নদীতে ৫ শত মনের ওজনের নৌকায় ধান, ইট, বালু নিয়ে যাতায়াত করত। কিন্তু বর্তমানে সেই খাল দিয়ে রাস্তার ও বসতবাড়ির বৃষ্টির পানি পর্যন্ত ঠিকভাবে নিষ্কাশিত হতে পারছে না। বর্তমানে এই খালে নবীগঞ্জ বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলার স্থান হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। খালের উপর জমেছে ময়লার স্থুপ যার ফলে ওসমানি রোড থেকে নতুন বাজার হয়ে ড্রেইনের পানি নিষ্কাসিত হতে পারে না। বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি এই খাল দিয়ে বের হতে না পারায় শিবপাশা এলাকার বাসা-বাড়ির উঠানে ও রাস্তায় সব সময় পানি লেগে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তাই বর্ষাকালের এই করুন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে এলাকাবাসী নবীগঞ্জ উপজেল নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার দৃষ্টি কামনা করছেন। নবীগঞ্জের এক সময়ের ঐতিহ্য শাখা বরাক নদীর চারদিকে অবৈধ দখল মুক্ত করতে এবং শহরের আশ-পাশের বিভিন্ন পাড়ার খাল ও নালা মুক্ত করে সঠিকভাবে খাল খনন, রক্ষণাবেক্ষন কর্মসুচীর আওতায় কাজ করে পানি নিষ্কাষনের ব্যবস্থা করতে বিদেশী প্রকল্প জাইকাসহ অন্যান্য এনজিও সংস্থার দৃষ্টি দেওয়া জরুরী। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জের সচেতন মহল, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের লোকজন একত্রিত হয়ে অচিরেই পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের ডাক দেবেন বলে সূত্রে জানা গেছে ।