নিউজ ডেস্ক:
গত ৪৩ বছরে দেশের প্রধান তিনটি নদী গঙ্গা যমুনা পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়েছে এক লাখ ৫৮ হাজার ৮২০ হেক্টর জমি। আর জেগেছে ৫৭ হাজার ৮১০ হেক্টর জমি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সিইজিআইএস) আয়োজনে নদীভাঙনের আগাম সতর্কতা বিষয়ে এক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা এসব তথ্য ও মতামত তুলে ধরেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, সিইজিআইএস দুই বছর ধরে দেশের বড় তিনটি নদী নিয়ে গবেষণা করে পূর্বাভাসব্যবস্থা চালু করেছে। এর ধারাবাহিকতায় চলতি বছরও কুড়িগ্রাম, বগুড়া, রাজবাড়ী ও শরীয়তপুর এলাকায় যমুনা, গঙ্গা ও পদ্মা নদীর মোট ২৯টি অংশে ভাঙনের পূর্বাভাস দেওয়া হয়। স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার এবং বিগত সময়ের তথ্য-উপাত্ত সংযুক্ত করে এ গবেষণাভিত্তিক পূর্বাভাস তৈরি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে ওই অংশগুলোর মধ্যে ৭৫ শতাংশ অতি ঝুঁকিপূর্ণ, ৫০ শতাংশ ঝুঁকিপূর্ণ ও ৩০ শতাংশ কম ঝুঁকিপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে যেসব অংশে ১০০ মিটারের ওপরে ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে কেবল সেগুলোকেই এ গবেষণার আওতায় নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে গত বছরের পূর্বাভাসের উপকারিতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, গত বছর ২৬টি অংশে ভাঙনের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশই সঠিক হয়েছে। এর মধ্যে দুটি এলাকায় ওই পূর্বাভাসকে সামনে রেখে সতর্কতামূলক নানা পদক্ষেপ নিয়েছিল ব্র্যাক।
এতে দেখা গেছে, মানুষ তাদের অনেক সম্পদ নিরাপদে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে। ফলে তাদের ক্ষয়ক্ষতি কমে গেছে।
অনুষ্ঠানে নদীভাঙনের আগাম সতর্কতা বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিইজিআইএসের উপনির্বাহী পরিচালক ড. মমিনুল হক সরকার। এ ছাড়া বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা ও নদীভাঙন ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক এ এম মমিনুল হক, সিইজিআইএসের গবেষক সুদীপ্ত কুমার হোড় এবং ব্র্যাকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির (ডিএমসিসি) সিনিয়র সেক্টর স্পেশালিস্ট মো. জাফর ইকবাল পৃথক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
কর্মশালায় মডারেটর ছিলেন ব্র্যাকের ডিএমসিসি কর্মসূচির পরিচালক গওহার নঈম ওয়ারা। এ ছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (কাবিখা-১) সৈয়দা মেহেরুন নেছা কবীরসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।