নিউজ ডেস্ক:

চলতি মাসের ১ তারিখ (শনিবার) থেকে এইচএসসি ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হলেও এখনো ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী। যদিও অভিভাবকদের দাবি, এ সংখ্যা আরো বেশি।

ভর্তিবঞ্চিত এসব শিক্ষার্থীর কথা চিন্তা করে আজ বুধবার (৫ জুলাই) আবারো নতুন করে আবেদন নেওয়ার কথা ছিল আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের। কিন্তু বোর্ডের অভ্যন্তরীণ সভা থাকায় সেটি আবারো পিছিয়ে যায়।

বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ভর্তি বঞ্চিতদের পুনরায় আবেদন প্রক্রিয়া আজ থেকে শুরু করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে আরো দুই-একদিন সময় লাগতে পারে। সভা শেষে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

ঢাকা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. মুহাম্মদ আশফাকুস সালেহীন বলেন, আজকে বোর্ডের অভ্যন্তরীণ মিটিং আছে। যার কারণে আজ (বুধবার) থেকে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে না। আমরা দুপুরের দিকে মিটিংয়ে বসব। সেখানে ভর্তি ও আবেদনসংক্রান্ত কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। সে ভিত্তিতে আবেদনের পরবর্তী সময় নির্ধারণ করা হবে। সেটি ৬ কিংবা ৭ জুলাই থেকেও হতে পারে। মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হলে সেটি আজ বিকেল থেকেও হতে পারে। তবে সে সম্ভাবনা খুবই কম।

তিনি বলেন, কলেজে চান্স পায়নি এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজারের কাছাকাছি। এ ছাড়া আবেদন করে চান্স পেয়েও ভর্তি হয়নি এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট কতজন হতে পারে সে বিষয়ে এখনো কিছুই বলা যাচ্ছে না। আজকে মিটিং শেষে পুরোপুরি সংখ্যাটা বলা যাবে। ভর্তিসংক্রান্ত বিষয়ে আজকালের মধ্যে ঢাকা বোর্ডের ওয়েবসাইটে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান বলেন, নিজেদের ভুলে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী এখনো ভর্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আসন পূর্ণ হয়ে গেলেও বারবার সেসব কলেজ পছন্দের তালিকায় দেওয়ায় তাদের নাম আসেনি। আবার অনেকে পছন্দের কলেজ না পেয়ে ভর্তি হয়নি। আবেদন করেও তালিকায় নাম না আসা শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজার। আর জিপিএ-৫ পেয়েও ভর্তি হতে পারেনি সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। আজকের মিটিংয়ের পর সব কলেজের শূন্য আসনের সংখ্যা জানা যাবে। বঞ্চিত ভর্তিচ্ছুদের আবারো ১০টি কলেজ পছন্দ দিয়ে আবেদন করতে বলা হবে। কোনো শিক্ষার্থী ভর্তির বাইরে থাকবে না।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ড সূত্র মতে, এবার প্রায় ১৩ লাখ ২০ হাজার শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য তিন ধাপে কলেজ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এজন্য নিশ্চায়ন করে ১২ লাখ ৩৬ হাজার শিক্ষার্থী। ৮৪ হাজার শিক্ষার্থী কলেজ নিশ্চায়ন করেনি। ফলে এসব শিক্ষার্থী ভর্তির বাইরে রয়ে গেছে। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ ধারী রয়েছে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী।

চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় সারা দেশে পাস করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৭২২। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৬১ জন।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক আশফাকুস সালেহীনের মতে, নামধারী কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী বঞ্চিত হয়েছে। রাজধানীতে এমন কলেজের সংখ্যা সীমিত হওয়ায় সবাইকে সেখানে সুযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এক্ষেত্রে যারা আগে আবেদন করছে তারাই ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।

এ ছাড়া ভর্তির আবেদনে ১০টি কলেজ নির্বাচন করার কথা থাকলেও ভর্তিবঞ্চিত অনেক মেধাবী দুই থেকে পাঁচটি কলেজ পছন্দ দিয়েছে। আসন পূর্ণ হওয়ার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে মাইগ্রেশনের সুযোগ দেওয়া হলেও তারা আর কলেজ পরিবর্তন করেননি। এ কারণেও অনেকে ভর্তি হতে পারেনি বলে জানান তিনি।