নিউজ ডেস্ক:
একাদশে ভর্তির প্রথম পর্যায়ের ফল প্রকাশ হয়েছে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল জানানো হবে। অথবা অনলাইনে www.xiclassadmission.gov.bd এই ঠিকানায় ফলাফল ও ভর্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবে।
আজ সোমবার এই তালিকা প্রকাশ করেছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় উপকমিটি।
একাদশে ভর্তির জন্য সারা দেশে ১৩ লাখ ১০ হাজার ৯১৪ জন ভর্তিচ্ছু আবেদন করেছে।
আন্তঃশিক্ষা সূত্র জানায়, ভর্তিচ্ছুদের পক্ষ থেকে মোট ৯ হাজার ৮৩টি কলেজে আবেদন পড়েছে প্রায় ৭২ লাখ। মোট আবেদনের মধ্যে ২৬ লাখ ৪১ হাজার ২৯০টি আবেদন জমা পড়েছে দেশের শীর্ষ ১০০টি কলেজে। যা মোট আবেদনের ৩৭ শতাংশ। এসব কলেজের মধ্যে রয়েছে ১০ শিক্ষা বোর্ডের শীর্ষ ১০টি করে কলেজ। এ বছর একজন ভর্তিচ্ছু তার পছন্দের মোট ১০টি কলেজে আবেদন করতে পেরেছে।
শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে আছে সরকারি কলেজগুলো। এরপরের স্থানে আছে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত মডেল এবং সামরিক বাহিনী পরিচালিত কলেজগুলো। ১৫৪টি প্রতিষ্ঠানে ১০টিরও কম আবেদন পড়েছে। ছয়টি প্রতিষ্ঠানে কেউ আবেদন করেনি। সারা দেশে আসন সংখ্যা রয়েছে ২৮ লাখ ৬২ হাজার ৯টি। আবেদনকারীর সংখ্যা ১৩ লাখ ৯ হাজার। সে অনুযায়ী ১৫ লাখ ৫৩ হাজার ৯ আসনে ভর্তির কেউ থাকছে না।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় উপকমিটির সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো আসন স্বল্পতা নেই। তবে ভালো মানের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম। এ কারণে ভালো ফলধারীদের ভর্তির জন্য বেশি প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। সবাই হয়ত তার পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারবে না। তবে কেউই ভর্তিবঞ্চিত হবে না।
গত মে মাসের ৯-৩১ তারিখ পর্যন্ত কলেজে ভর্তির আবেদন নেওয়া হয়। সারা দেশে ৯ হাজার ৮৩টি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে চাহিদার শীর্ষে থাকা ১০টি কলেজের মধ্যে ঢাকার রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে এবার সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে। কলেজটিতে ১ হাজার ৬৩৮টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৪২ হাজার ৬৪৫টি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে ঢাকা সিটি কলেজ ও সরকারি বাংলা কলেজ। সিটি কলেজে ৩ হাজার ৪৫০টি আসনের বিপরীতে আবেদন পড়েছে ৩৯ হাজার ৩১৬টি। বাংলা কলেজে ১ হাজার ৭০০ আসনের বিপরীতে ৩৯ হাজার ৫২টি আবেদন পড়েছে। চতুর্থ স্থানে রাজশাহী কলেজ। আবেদন পড়েছে ৩৮ হাজার ৮৯১টি। পঞ্চম স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ। আবেদন পড়েছে ৩৭ হাজার। ষষ্ঠ স্থানে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ। আবেদন পড়েছে ৩৬ হাজার ৭৭৭টি। রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজ সপ্তম স্থানে রয়েছে। কলেজটিতে আবেদন পড়েছে ৩৫ হাজার ৫৭১টি। অষ্টম স্থানে ময়মনসিংহের সরকারি আনন্দ মোহন কলেজ। আবেদন পড়েছে ৩৪ হাজার ৮৯৮টি। নবম ও দশম স্থানে যথাক্রমে আছে রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ এবং নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজ, রাজশাহী। আবেদন পড়েছে যথাক্রমে ৩১ হাজার ৬৪৫টি ও ২৮ হাজার ৬৭০টি।
সব শিক্ষা বোর্ডের শীর্ষ ১০ কলেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা বোর্ডের শীর্ষ কলেজগুলোতে ৩ লাখ ৩০ হাজার ৯৫১টি আবেদন পড়েছে। কুমিল্লা বোর্ডে ১ লাখ ১টি, রাজশাহীতে ২ লাখ ৭৯ হাজার ৭৭, চট্টগ্রামে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৬২৯, বরিশালে ৭৪ হাজার ২১৬, সিলেটে ৭২ হাজার ২৮২, দিনাজপুরে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৬৮, যশোর শিক্ষা বোর্ডে শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে ১ লাখ ২২ হাজার ৪৩টি আবেদেন পড়েছে।
এ ছাড়াও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে করা হয়েছে ১৪ হাজার ৮৬৪টি এবং কারিগরি বোর্ডের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানে ১৬ হাজার ৪১১টি আবেদন পড়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের স্কোরের ওপর ভিত্তি করে অনলাইন ও এসএমএসের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি হবে। শিক্ষার্থীর আবেদন যাচাই বাছাইয়ের ভিত্তিতে পছন্দক্রম ও যোগ্যতা অনুযায়ী ভর্তির জন্য একটি কলেজ বাছাই করে দেবে শিক্ষা বোর্ড। আর নির্বাচিত কলেজে ভর্তি শুরু হবে আগামী ২০ জুন থেকে। ক্লাস শুরু হবে ১ জুলাই।
ভর্তি নীতিমালায় প্রশাসনিক এলাকাভিত্তিক ভর্তি ফি, সেশন চার্জসহ সর্বসাকল্যে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নীতিমালার বাইরে বেশি টাকা নেওয়া হলে, সেসব প্রতিষ্ঠান ও কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছে শিক্ষা প্রশাসন।
১৮৪টি কলেজকে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবে কলেজে আসন সংকটের নানা খবরে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছিল পাস করা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মাঝে। ফলে কলেজে ভর্তি হতে পারবে কি না তা চিন্তা করে মেধাবীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। তবে ভালো মানের কলেজের সংখ্যা কম হওয়ায় মেধাবীরা কাঙ্খিত প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে প্রতিযোগিতার মুখে পড়বে ঠিকই, কিন্তু আসন-সংকটের কারণে কেউ সুযোগ বঞ্চিত হবে না।