একমাত্র সঞ্জয়কে দোষী করে আরজি কর মামলার রায় ঘোষণা

0
9

ভারতের কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক তিলোত্তমা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) শিয়ালদহের অতিরিক্ত বিভাগীয় ও দায়রা আদালত সঞ্জয় রায়কে দোষী হিসেবে চিহ্নিত করে ১৬০ পাতার রায় ঘোষণা করেন। আগামী সোমবার তার সাজা ঘোষণা করা হবে।

২০২৪ সালের ৯ আগস্ট তিলোত্তমার মরদেহ আর জি কর হাসপাতালের একটি কক্ষে পাওয়া যায়। তিলোত্তমার হত্যাকাণ্ডের পর কলকাতায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয় এবং স্থানীয় শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালান। বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্বের কারণও হয়ে ওঠে।

এজলাসে সঞ্জয় রায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও এর আগে অপরাধ স্বীকার করেছিলেন। হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করার পর, পুলিশের কাছ থেকে সিবিআই দায়িত্ব নেয় এবং তারা সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার প্রমাণ পায়।

রায়ের পর তিলোত্তমার বাবা বিচারকের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “আপনার ওপর যে বিশ্বাস আমি রেখেছিলাম, তা আপনি সম্মান করেছেন।”

সঞ্জয় রায়কে বাড়তি নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় সঞ্জয় দাবি করেন, তাকে ফাঁসানো হচ্ছে এবং এক আইপিএস এই হত্যাকাণ্ডের সব জানে।

হাসপাতালের সেমিনার হল উদ্ধার হয় তিলোত্তমার অর্ধনগ্ন দেহ। ১০ আগস্ট এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে আটক করা হয়। ২০১৮-এর ২৯ অক্টোবর কোলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরিতে যোগদান করে সঞ্জয়।

সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কোলকাতা পুলিশের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপে যোগ দেয় সঞ্জয়। ২০২১-এ ৪ অক্টোবর কোলকাতা পুলিশের ওয়েলফেয়ার বোর্ডে পোস্টিং হয় তার। সল্টলেকে পুলিশের ফোর্থ ব্যাটেলিয়নের ব্যারাকে তার পদায়ন হয়।

এরপর আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আউটপোস্টে কর্মরত হয় সঞ্জয়। চিকিত্‍সা করাতে আসা কলকাতা পুলিশের আধিকারিক-কর্মীদের দেখভালের দায়িত্বেও থাকে সে। এখান থেকেই শুরু হয় হাসপাতালে সঞ্জয়ের অবাধ যাতায়াত। সিভিক হিসেবে সঞ্জয়ের রিপোর্টিং বস ছিলেন কোলকাতা পুলিশের এসআই অনুপ দত্ত।

ভারতীয় গণমাধ্যগুলো বলছে, একসময় ভবানীপুর বক্সিং অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত ছিল সঞ্জয়। ২০১৪-তে প্রথম বিয়ে করে সে। তার দুমাস যেতে না যেতে ডিভোর্স। ২০১৭-তে এক বিধবা মহিলাকে বিয়ে। প্রথম বিয়ের পুনরাবৃত্তি ঘটে এবারও। কয়েক মাসের মধ্যেই ডিভোর্স হয়ে তার। পরে ফের বিয়ে করে সঞ্জয়। জানা যায়, ক্যানসারে মৃত্যু হয় তৃতীয় স্ত্রীর।