মোঃ সুমন আলী খাঁন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণের আর মাত্র চারদিন বাকী। শেষ মুহূর্তে এসেও প্রচারণা জমেনি। হাট-বাজার কেন্দ্রিক এ প্রচারণা সীমাবদ্ধ থাকায় তৃণমূল ভোটারদের মাঝে এ উপনির্বাচনকে ঘিরে তেমন উৎসাহ দেখা যাচ্ছে না। তবে সচেতন মহলে জয়-পরাজয়ের হিসাব চলছে ঠিকই। কেউ আওয়ামীলীগকে, কেউ বিএনপি আবার কেউ বা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে এগিয়ে রাখছেন। তবে লড়াই হবে ত্রিমুখী -এ ব্যাপারে দ্বিমত নেই অধিকাংশেরই। এ উপনির্বাচনে আওয়ামীলী, বিএনপিসহ ৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ৪ নভেম্বর এ উপনির্বাচনে ভোগগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলার ৬১ কেন্দ্রে ১ লাখ ২৪ হাজার ১২০ জন ভোটার ভোট প্রয়োগ করবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাহুবল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শিহাব উদ্দিন সাকিব প্রবাসে গমন করায় সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফিরোজ মিয়ার আবেদনে পদটি শূন্য করে কর্তৃপক্ষ। যথারীতি শূন্যপদে নির্বাচন কমিশন গত ২৪ সেপ্টেম্বর উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এ উপনির্বাচনে মোঃ তারা মিয়া (নৌকা) মোঃ চান মিয়া (ধানের শীষ), ডা. রমিজ আলী (আম) ও মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফিরোজ মিয়া (তালা) প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন।
জানা যায়, বাহুবল উপজেলায় চা শ্রমিক ও মৎস্যজীবীদের পৃথক দু’টি ঐক্যবদ্ধ সম্প্রদায় রয়েছে। চা শ্রমিকরা যেমন প্রার্থী না দেখে ভোট দেয় ‘নৌকা’ প্রতীকে তেমনি মৎস্যজীবীরা ‘প্রতীক’ না দেখে ভোট দেয় নিজ সম্প্রদায়ের প্রার্থীকে। ফলে এ দু’সম্প্রদায়ের ভোটের মাঠে কদর অনেক বেশি। স্থানীয় লোকজনের সাথে আলোচনা ও ভোটার তালিকা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ দু’সম্প্রদায়ে ভোটারের হার যথাক্রমে ৯ ও ১১ ভাগ। চা শ্রমিক সম্প্রদায়কে পূঁজি ধরে এখানে আওয়ামীলীগের ভিত্তি মজবুত বিবেচনায় তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে একক ভাবে শক্তিশালী প্রার্থী বিবেচনা করা হয়। যুবলীগ নেতা মোঃ তারা মিয়াকে দলীয় মনোনয়ন প্রদান করে আওয়ামীলীগ। এ অবস্থায় আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাংককে টক্কর দিতে বিএনপি প্রার্থী মনোনয়নে কৌশল অবলম্বন করে। তারা মৎস্যজীবী সম্প্রদায় থেকে মোঃ চান মিয়াকে (সাবেক ইউপি মেম্বার) মনোনিত করে। এছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য ও জন সংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রমিজ আলী (সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান) এনপিপি’র মনোনিত এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফিরোজ মিয়া (সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান) (তালা) স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় বেকায়দায় পড়ে আওয়ামীলীগ। প্রচারণা শুরু হলে সাম্প্রদায়িক ভোট ব্যাংককে পূঁজি করে মোঃ চান মিয়া আলোচনায় উঠে আসলে বিএনপি নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হয়ে উঠে। স্বতস্ফূর্ত ভাবে বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রচারণায় নামে। পক্ষান্তরে আওয়ামীলীগও মহাজোটের শরীক জাতীয় পার্টির একাংশকে মাঠে নামায়। উভয় প্রার্থীর পক্ষে উপজেলা ও জেলা নেতৃবৃন্দ প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। অপর দিকে, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচিতি, ব্যক্তিগত ক্লিন ইমেজ ও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকে পূঁজি করে প্রচারণার মাঠে ভাল অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফিরোজ মিয়া। এ অবস্থায় আওয়ামীলীগ প্রার্থী মোঃ তারা মিয়া, বিএনপি প্রার্থী মোঃ চান মিয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ ফিরোজ মিয়ার মাঝে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলেই স্থানীয় লোকজন ধারণা করছেন।