ঝিনাইদহ সরকারি কেসি কলেজে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুষ্ঠিত ডিগ্রী পরীক্ষার নামে চলছে শিক্ষকদের সহযোগীতায় ব্যাপক হারে নকল সরবরাহের অভিযোগ
জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ সিটি কলেজের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ম মোতাবেক সরকারি কেসি কলেজে হয়ে থাকে। সে অনুযায়ী ১১ই মে/১৮ তারিখে কেসি কলেজে প্রতি শুক্রবারে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ডিগ্রী পরীক্ষা শুরু হয়। তবে এবারের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ডিগ্রী পরীক্ষা নামে চলছে ব্যাপক হারে নকল সরবরাহ প্রতিযোগিতা। এক শ্রেনীর শিক্ষক টাকার বিনিময়ে নির্ধারিত শিক্ষার্থদের নকল সাপ্লাই করছেন। সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের বিষয়ে জানা ও দেখা গেছে, বড় অংকের টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার হলে দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের সহযোগীতায় কর্মচারিরা তাদের পকেটে করে বয়ে আনা নকল অবাধে সরবরাহ করছে বলে একটি বিশ্বস্ত সুত্রে পাওয়া যায়।
১৮ মে শুক্রবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত ইংরেজি পরীক্ষা শেষে দুপুর ১২টার দিকে ছাত্র-ছাত্রীরা বেরিয়ে আসলে তাদের সাথে সাংবাদিকদের দীর্ঘক্ষন নকল সরবরাহের ব্যাপক তথ্য দেই। তারা সাংবাদিকদের জানান, টাকা পয়সার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের সহযোগীতায় কে,সি কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগে কর্মরত মাসুদরানা তার পকেটে অবৈধভাবে নকল বয়ে এনে ছাত্রছাত্রিদের মাঝে এসব নকল সরবরাহ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্র ছাত্রীরা সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করে বলেন, যে সব ছাত্রছাত্রী টাকা পয়সার চুক্তি করেছেন তাদেরকে অবাধে নকল করার অবৈধ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আর যারা চুক্তি করে নাই তাদের কোন প্রকার সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। এভাবে অবৈধ ভাবে নকল করে পরীক্ষা চলার কারনে ভালো ছাত্রছাত্রীরা বিপাকে পড়ছে।
দায়িত্বে থাকা শিক্ষক ও কর্মচারিরা কোন ক্ষমতার বলে ও কেন এই অবাধে অবৈধ নকল সরবরাহ করে পরীক্ষার হলের সার্বিক পরিবেশ নষ্ট করছে ? তারা এ প্রশ্ন করেছেন ঝিনাইদহের সাংবাদিক মহল ও জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর। এ ব্যপারে অভিযুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারিদের সাথে কথা বললে শিক্ষকদের একাংশ ঘটনার জবাব না দিয়েই সাংবাদিকদের উপরে ক্ষিপ্ত ও চড়াও হয়। তবে কেসি কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল করীম সাংবাদিকদের সুপরামর্শ দিয়ে বলেন এ সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য এবং বলেন, আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো। যখন অবাধে নকল সরবরাহ করার বিষয়টি নিয়ে যখন আলোচনা সমালোচনার ঝড় চলছে তখন শহরের স্থানীয়রা শিক্ষক ও কর্মচারিদের টাকার বিনিময়ে অবাধে নকল সরবরাহ করার বিষয়টি নিয়ে কটু কথা বলতেও দ্বিধাবোধ করেননি। তারা আরো বলেন, শিক্ষকরা যদি এধরনের চোর হয় তাহলে ছাত্রছাত্রীরা আর কী শিখবে?
এ ব্যপারে অভিভাকরা জেলা প্রশাসকের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করে ঐ সব নিকৃষ্ট শিক্ষক ও কর্মচারিদের দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবী করেছেন। অবাধে অবৈধ নকল সরবরাহ করার ঘটনায় ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। আবার জেলা নির্বাহী ম্যজিষ্ট্রেট সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির ষ্ট্রিপ জানান, পরের পরীক্ষাগুলোতে নকল মুক্ত করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ও গত ইংরাজি পরীক্ষার দিনের ঘটনায় শিক্ষক ও কর্মচারিদের অবাধে নকল সরবরাহ করার অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সাংবাদিকদের পরীক্ষার হল পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, সাংবাদিকরা পরীক্ষার হলে দায়িত্বে থাকা অভিযুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারিদের নাম, ঠিকানা ও পরিচয় নিতে চাইলে কলেজ কর্তৃপক্ষ অস্বীকৃতি জানায়।