নিউজ ডেস্ক:
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে ‘জিএসপি প্লাস’ সুবিধার আওতায় বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে এখনই কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
মঙ্গলবার হোটেল লা মেরিডিয়ানে ইউরোপিয়ান কমিশন আয়োজিত জিএসপির মধ্যবর্তী মূল্যায়নবিষয়ক স্টেকহোল্ডার আউটরিচ ওয়ার্কশপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।
পোশাকশিল্পে জিএসপি সুবিধা অব্যাহত রাখায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, গত অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল ২৮ বিলিয়ন ডলার। যার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এসেছে প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরে তা আরো বাড়বে। এর পেছনে জিএসপি সুবিধা অসাধারণ ভূমিকা রেখেছে।
মন্ত্রী বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে যাচ্ছে। তখন বাংলাদেশ ইইউ বাজারে জিএসপি প্লাস সুবিধার আওতায় যাবে। সে সুবিধা পেতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তবে এ সময়, বাংলাদেশের শ্রমিকেরা আন্তর্জাতিক বাজারে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘রানা প্লাজা ধস আমাদের জন্য একটি বিরাট ধাক্কা ছিল। আমরা এরপর পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশসহ নানা ক্ষেত্রে উন্নতি করেছি। শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো হয়েছে। কর্মপরিবেশ উন্নত করাসহ আরো কাজ করা হয়েছে কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে পরিশ্রম অনুযায়ী ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না বাংলাদেশের পোশাকশ্রমিকেরা।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদু বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে সবচেয়ে সুবিধা পাওয়া দেশ বাংলাদেশ। জিএসপি ও ইবিএন সুবিধা শুধু রপ্তানি বাড়ায়নি, এর ফলে দেশে কর্মসংস্থানসহ আর্থসামাজিক উন্নয়ন বেড়েছে।পোশাক খাতে ৪০ লাখ নারী শ্রমিক কাজ করছে জানিয়ে মায়াদু বলেন, ইবিএ সুবিধা এদের দারিদ্র্য দূরীকরণে সাহায্য করেছে।
মায়াদু বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বাজারসুবিধা নীতির আলোকে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলো (এলডিসি) ইইউতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারমূলক বাজার (জিএসপি) সুবিধা পায়। তবে এই জিএসপি হলো অস্ত্র বাদে সব (ইবিএ) পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা। বর্তমানে শুধু এলডিসিগুলো এ সুবিধা পায়।
তবে এলডিসির কাতার থেকে বেরিয়ে গেলে বাংলাদেশ আর এ সুবিধা পাবে না। সে ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য জিএসপি প্লাস হিসেবে পরিচিত যে বাজার সুবিধা রয়েছে, বাংলাদেশ এর আওতায় পড়বে। টেকসই উন্নয়ন ও সুশাসনের জন্য সহায়তা হিসেবে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জিএসপি প্লাস সুবিধা দেওয়া হয়, যা ইবিএর মতো সব পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয় না। বর্তমানে পাকিস্তানসহ ২৫টি উন্নয়নশীল দেশ এ সুবিধা পায়।
মায়াদু বলেন, তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মপরিবেশের উন্নয়নে বাংলাদেশ এরই মধ্যে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে পোশাকশিল্পের পাশাপাশি বাংলাদেশকে অন্যান্য শিল্প খাত বৈচিত্র্যকরণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইউরোপিয়ান কমিশনের বাণিজ্যবিষয়ক মহাপরিচালক ডেনিয়েল ক্রেমার, এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো, বাংলাদেশের ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।