অপারেশনের ১০ মাসেও শুকায়নি সেলাইয়ের ক্ষত : ক্ষতিপূরণ দাবি
নিউজ ডেস্ক:আলমডাঙ্গার কনা নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে সিজারিয়ান রোগীকে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। অপারেশনের দশ মাস অতিবাহিত হলেও ক্ষতস্থানের সেলাই শুকায়নি ভুক্তভোগী নাসিমা খাতুনের। এ অবস্থায় চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন নাসিমা খাতুন। ভুক্তভোগী নাসিমা খাতুন আলমডাঙ্গার স্টেশনপাড়ার বদর উদ্দিনের মেয়ে।নাসিমা খাতুন জানান, তিনি স্বামী দেলোয়ারকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই বসবাস করেন। নাসিমা প্রথমবারের মতো প্রেগন্যান্ট হলে আলমডাঙ্গার কনা নার্সিং হোমের ডা. নুরুন নাহারের তত্ত্ববধায়নে চিকিৎসা নেন। তার প্রসব বেদনা উঠলে ২০১৭ সালের ৭ অক্টোবর কনা নার্সিং হোমে ভর্তি হন। সেখানে ওইদিন বেলা ২টার দিকে ডা. নুরুন নাহার তাকে দেখে পেটের সন্তান মারা গেছে বলে জানান। প্রসব বেদনা তীব্রতর হলে পরদিন ভোরে তার সিজার করা হয়। প্রসব হয় মৃত মেয়ে সন্তান।
নাসিমা খাতুন ভিযোগ করে বলেন, আমার পেটে সন্তান নড়াচড়া করছিলো। আমি যাওয়ার পরপরই সিজার করে দিলে আমার সন্তান বেঁচে যেতো। কিন্তু ডাক্তারের অবহেলার কারণেই আমার প্রথম সন্তান পৃথিবীর আলো দেখতে পারেনি। তিনি কাঁদতে কাঁদতে আরো বলেন, সিজারের পর থেকে আমি সুস্থ হতে পারিনি। ক্ষতস্থান কোনোভাবেই শুকায়না। বারবার ডা. নুরুন নাহারের কাছে যায়, বারবার তিনি এন্টিবায়োটিক ওষুধ লেখেন। মাঝে মধ্যে গোসল করতে নিষেধ করেন। আমি কোনো কোনো সময় ৫ থেকে ১০ দিন গোসল করি না। কিন্তু আমার সেলাইয়ের স্থানের ঘা শুকোয় না। সিজারের ১০ মাসেও আমার ঘা না শুকোলে আমি খুব চিন্তিত হয়। আবার যায় ডা. নুরুন নাহারের কাছে এভাবে তিনি শুধু ১৫ হাজার টাকার এন্টিবায়োটিকই লিখেছেন। অবশেষে বাধ্য হয়ে আলমডাঙ্গার আরেক ডা. জিয়াউদ্দিন সাইদ হাদীর কাছে যায়। তিনি আল্ট্রাসনোর পর জানান, সিজারিয়ানের সময় বাইরের গজ, সুতো বা টিসু জাতীয় কিছু পেটের ভেতর রয়ে গেছে। এ কারণে ঘা শুকোচ্ছে না। আবারও অপারেশ করে সেটা অপসারণ করতে হবে।
নাসিমা খাতুন বলেন, আমি গরিব মানুষ। সিজারের সময় নগদ ৬ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। আরও ২ হাজার টাকা দিতে হবে বলে বাকির খাতায় লিখে রেখেছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। আর দীর্ঘ ১০ মাস ভোগান্তি আর হয়রানি আমাকে শেষ করে দিয়েছে। আমি এর ক্ষতিপূরণ চাই। আমি কনা নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে মামলা করবো।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত কনা নার্সিং হোমের ডা. নুরুন নাহার বলেন, আমার অভিযোগ সঠিক নয়। পেটে বাইরের কোনো কিছুই নেই। এতদিন নাসিমা ভালোই ছিলো। সামান্য সমস্যার কারণে পুঁজ হয়েছে। চিকিৎসাই ভালো হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, নাসিমার পেটের সন্তান নার্সিং হোমে আসার আগেই মারা গিয়েছিলো।