আলমডাঙ্গার হারদী ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে গত বৃহস্পতিবার ১০০ বছরের পুরাতন একটি রাস্তা বন্ধ করে বেড়া দেওয়া হয়েছে। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে ১৫০টি পরিবার। এই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের জমির মালিক মৃত রিয়াজ আলির ছেলে সিরাজ ও মৃত আয়ুব আলির ছেলে আজিল হোসেনের বিরুদ্ধে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতার পালাবদলের বাইরের লোকজনকে দাওয়াত দিয়ে গরু জবাই করে খাওয়ানোর পর তারা এমন কাজ করেছে। এমনকি ওসমানপুর ক্যাম্প ইনচার্জের উপস্থিতিতেই এ ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে। তবে ক্যাম্প ইনচার্জ রাস্তা বন্ধ করার কথা অস্বীকার করে দাওয়াত খাওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন বলে স্বীকার করেছেন।
গতকাল শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গেলে গ্রামের মানুষ অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা জোরপূর্বক দখল করে বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে। ফলে ওই পরিবারের সন্তানদের স্কুলে যাতায়াত, কৃষি পণ্য আনা-নেয়াসহ নানা সমস্যায় পড়েছে পরিবারগুলো।
এ বিষয়ে কেশবপুর গ্রামের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মুনছুর বলেন, শত বছরের পুরাতন রাস্তায় বেড়া দিয়ে প্রায় ৫০০ মানুষকে অবরুদ্ধ করার মতো জঘন্যতম কাজ করা হয়েছে। মেম্বার হিসেবেও আমাকে তারা কিছু জানায়নি।
ভুক্তভোগী রইচ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিনের রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, পরিবারসহ আমরা এখন কী করব? পৃথিবীতে যার জমি নেই, তার কি বাঁচার অধিকার নেই? আরেক ভুক্তভোগী সাজাহান বলেন, গ্রামের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু হঠাৎ রাস্তা বন্ধ করার পর ভ্যানচালক, নসিমন চালকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। পাশের জমির মালিক গফুরুল্লাহ বলেন, গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ প্রায় ১০০ বছরের অধিক মানুষ নিয়ে জমির মাপযোগ করা হয়। আমি পাশের জমির মালিক হলেও ভয়ে যেতে পারিনি। তারা নিজেদের মতো করে জমির সীমানা নির্ধারণ করে গেছে।
জমির মালিক সিরাজ ও আজিল বলেন, পূর্বে রাস্তার জন্য জমি দিয়েছিলাম। তবে এখন আর এককভাবে দিতে পারব না। পাশের জমির মালিকের কারণে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে শরীকদের সঙ্গে বসতভিটার জমি নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছিল না, তাই আর জমি দেব না।
গ্রামের সাধারণ মানুষ মনে করেন, গ্রামের মোড়লদের কারণে ১৫০টি পরিবারের এই দুর্ভোগ। জমির মালিকেরা পূর্বেও রাস্তার জন্য জমি দিয়েছিল, এখনও দিতে রাজি, কিন্তু কিছু ব্যক্তির কারণে আজ এই পরিস্থিতি।
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ মেহেদী ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমাকে কেউ অবহিত করেনি। তবে এখন জানলাম, আমি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।’