নীলকন্ঠ ডেক্স :
আলমডাঙ্গায় পরকীয়া প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে প্রবাসির স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ পৌরসভা এলাকার গোবিন্দপুরের ভাড়া বাসা থেকে প্রবাসীর স্ত্রীর মরাদেহ উদ্ধার করে।পরিবারের দাবী, পরকীয়া প্রেমিক তাকে হত্যা করে সব প্রমাণ নষ্ট করে লাশ ঘরের মেঝেতে রেখে পালিয়ে গেছেন। প্রবাসীর স্ত্রী রেশমা খাতুন (২৭) চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার দৌলতদিয়াড় গ্রামের শিমুল সর্দ্দারের স্ত্রী ও আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছী গ্রামের সাইদুর রহমানের মেয়ে। প্রায় ১৪ বছর আগে রেশমা খাতুনের সাথে শিমুলের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে সিমি নামের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সে আলমডাঙ্গা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গার বেলগাছি গ্রামের সাইদুর রহমানের মেয়ে রেশমা খাতুনের সাথে ১৪ বছর আগে চুয়াডাঙ্গার দৌলতদিয়াড়ের শিমুল সর্দ্দারের বিয়ে হয়। এই দম্পতির পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া সিমি নামের একটি মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী এবং মেয়েকে বাড়িতে রেখে শিমুল সর্দ্দার প্রায় ৭ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমান।
এরই মধ্যে এক বিয়ে বাড়িতে আলমডাঙ্গার বামানগর গ্রামের সবুর নামের এক ভিডিও ম্যানের সাথে রেশমার পরিচয় হয়। এরপর থেকে তাদের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক চলতে থাকে। সম্পর্ক গভীর হলে রেশমা বিদেশ থেকে তার স্বামীর পাঠানো টাকায় প্রেমিক সবুরকে সৌদিতে পাঠায়। এক বছর থেকে সুবিধা করতে না পেরে সবুর সৌদি থেকে দেশে ফিরে আবারও ভিডিও’র দোকানে কাজে যোগ দেয়। ভিডিও ক্যামেরা কেনার জন্য টাকা চায় রেসমার নিকট।
পরকীয়া প্রেমিকের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখতে রেশমা ৬ মাস আগে মেয়ের স্কুলে পড়ানোর অজুহাতে আলমডাঙ্গার পৌর এলাকার ৭ং ওয়ার্ডে গোবিন্দপুরে ‘মোল্লা বাড়ি’ নামের এক প্রবাসীর বাড়ি ভাড়া নেয়।
রেশমার বোনের মেয়ে শিমলা জানায়, সবুর রেশমার ভাড়া বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করত। তারা বিয়ে করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে সবুর রাজি থাকলেও তার বাড়ির লোকজন রাজি ছিল না। শিমলা আরও জানায়, সম্প্রতি সবুর একটি দামি ক্যামেরা কিনতে রেশমার কাছে উপর্যুপরি টাকা দাবি করে আসছিল। এতে দু’জনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। দ্বন্দ্বের জেরে দুপুরে রেশমা প্রেমিক সবুরকে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিতে থাকে। সবুর দ্রুত ভাড়া বাড়ির পাঁচতলায় উঠে দরজা খোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে বাড়ির ছাদে উঠে বারান্দার গ্রীল ভেঙে ভেতরে ঢুকে গলার ফাঁস কেটে রেশমাকে নিচে নামায়। রেশমার মোবাইলফোন থেকে ভিডিও ডিলিট করে। এরপর নিজের দোষ ঢাকতে রেশমার মৃতদেহ ঘরে রেখেই সবুর পালিয়ে যায়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আত্মহত্যার ঘটনাটি রহস্যজনক। লাশ ময়নাতদন্ত করলেই সবকিছু বোঝা যাবে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ইতোমধ্যে তদন্তে নেমেছে।