নিউজ ডেস্ক:
পরিবারের সচ্ছলতা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা ভেবে কর্মব্যস্ত প্রবাসে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি। নিজের শ্রমে কর্মস্থলের পাশাপাশি কেউ কেউ দেশের নামও উজ্জ্বল করার দারুণ চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করেন সেখানে।
গতানুগতিক নিয়মের বাইরে এসে একসময় তারা পৌঁছে যান সাফল্যের শিখরে। ব্যক্তি নামের পাশাপাশি তখন প্রতিষ্ঠানের নামও প্রচার হতে থাকে সকলের মুখে মুখে।
দেশের বাইরে এমন প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে প্রবাসীদের চেনা-জানার আশ্রয়স্থল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির প্রাণকেন্দ্রে এমনই একটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টমেরিন রেস্টুরেন্ট’। যা দুবাই, শারজা, আজমান বা দূর দূরান্তের প্রবাসীদের কাছে রাজধানীর ঠিকানা।
আবুধাবির ইলেক্ট্রা রোড, আল মোল্লা বা খেঁজুর তলা অথবা জনতা ব্যাংক। একসময় এসব স্থানগুলোই আমিরাত প্রবাসী বাংলাদেশিরা ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করতেন। আড্ডার স্থলও ছিল এগুলোই। তবে আল মোল্লা বিল্ডিং ভেঙ্গে দেয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে এসব স্থানগুলো হতে সরে আসেন বাংলাদেশিরা। দূর দূরান্ত হতে ছুটে আসা প্রবাসীদের আড্ডা আর মিলনমেলার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় রাজধানীর ইলেক্ট্রা রোডের বাংলাদেশি এই প্রতিষ্ঠান সেন্টমেরিন রেস্টুরেন্ট।
সিটির বাইরে মুসাফফা, শিলা, বেদা যায়েদসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহর থেকেও কেউ আবুধাবি আসলে ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করেন এই রেস্টুরেন্টের নাম। আবুধাবির প্রাণকেন্দ্রে হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির নামের ব্যবহার ব্যাপারটি এমন নয় বরং যোগাযোগ ব্যবস্থা, খাবারের মান ও পরিবেশের উপরই সেন্টমেরিনের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে আমিরাতে।
একদিকে যেমন এখানে দেশীয় খাবারের ভরপুর পরিবেশনা তেমনি বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের জন্যে হয়ে থাকে বিশেষ আয়োজন। যার ফলে দেশি কাস্টমার ছাড়াও বিদেশি কাস্টমাররাও হরহামেশা ভিড় করেন এখানে। দেশী বিদেশি প্রবাসীদের পাশাপাশি রাজধানীর ঠিকানা হিসেবে পরিচিত রেস্টুরেন্টটি ঘুরে গেছেন দেশের নোবেল বিজয়ী ড. ইউনুস, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, চিত্রনায়ক রিয়াজ সহ খ্যাতি সম্পন্ন অনেক ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন কাস্টমারের সঙ্গে সু-সম্পর্ক তৈরি, খাবার পরিবশেন ও মান ধরে রেখে প্রতিষ্ঠানটি দেশের নাম উজ্জ্বল করায় আনন্দিত এখানকার কর্মীরাও।
প্রতিষ্ঠানের মালিক মঈন উদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তিনি আমিরাতে যান ১৯৯৩ সালে। মরুর দেশে পা রেখেই নিজের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার স্বপ্ন পোষতেন আপন মনে। প্রথমদিকে শেখ জায়েদ বিন আল নাহিয়ানের ঘরে কর্মজীবন শুরু হলেও ২০০৪ সালে নিজের স্বপ্নের বাস্তবায়ন করে প্রতিষ্ঠা করেন ব্যয়বহুল এই রেস্টুরেন্ট। মাছে-ভাতে বাঙ্গালি হিসেবে প্রবাসেও বাংলাদেশিদের পরিচিতি ও সুনাম রক্ষায় এমন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগ বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য,দেশ হতে হাজার মাইল দূরেও দেশের ইমেজ তুলে ধরার ব্রত নিয়ে সেন্টমেরিনের মত এমন প্রতিষ্ঠানগুলো দাঁড়িয়ে আছে সগৌরবে। ব্যবসা বান্ধব এসব প্রতিষ্ঠান একদিকে যেমন রেমিটেন্স বৃদ্ধিতে গুরুত্ব বহন করছে তেমনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ঐক্য ও মেলবন্ধন ধরে রাখতে রাখছে সহায়ক ভূমিকা।