নিউজ ডেস্ক:
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাণিজ্য সুবিধা বৃদ্ধির ফলে আপটাভুক্ত দেশগুলোর বাণিজ্য অনেক বাড়বে।
আপটার চতুর্থ রাইন্ড নেগোসিয়েশনের আওতায় শুল্ক সুবিধাপ্রাপ্ত পণ্যসংখ্যা ৪ হাজার ৬৪৮ থেকে ১০ হাজার ৬৭৭টিতে উন্নীত হবে।
গত শুক্রবার থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত চতুর্থ মিনিস্টেরিয়াল কাউন্সিল সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এতে আপটাভুক্ত দেশগুলোতে বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং এসডিজি অর্জনে সহায়ক হবে, ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। শুল্ক ও বাজার সুবিধা বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ বকসী এ তথ্য জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আপটার ভবিষ্যৎ কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে হবে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে পণ্য বাণিজ্যে শুল্ক সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি সেবাখাত, বিনিয়োগ এবং ট্রেড ফেসিলিটেশন বিষয়ে ২০০৯ সালে স্বাক্ষরিত ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি দ্রুত কার্যকর করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে এলডিসিভুক্ত দেশগুলোকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘রূপকল্প-২০২১’ অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
আপটার চতুর্থ রাইন্ড নেগোসিয়েশনের আওতায় বাংলাদেশ ৫৯৮টি পণ্যে ১০ থেকে ৭০ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশের জন্য আরো চারটি পণ্যে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ, চীন ২,১৯১টি পণ্যে ৫ থেকে ১০০ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য আরো ১৮১টি পণ্যে ১২.৫ শতাংশ, ভারত ৩,৩৩৪টি পণ্যে ৫ থেকে ১০০ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ১৪ থেকে ১০০ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়া ২,৭৯৬টি পণ্যে ১০ থেকে ৫০ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ৯৬১টি পণ্যে ২০ থেকে ১০০ শতাংশ, শ্রীলংকা ৫৮৫টি পণ্যে ৫ থেকে ৬২.৫ শতাংশ এবং এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য ৭৫টি পণ্যে ১০ থেকে ৫০শতাংশ, লাওস ৯৯৯টি পণ্যে ২০ থেকে ৩৭.৫ শতাংশ এবং মঙ্গোলিয়া ৩৩৩টি পণ্যে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ শুল্ক ছাড় দেবে। এর ফলে বাংলাদেশ সর্বাধিক বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করার সুযোগ পাবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে এশিয়া প্যানপ্যাসিফিক অঞ্চলের সর্বপ্রথম প্রাধিকারযোগ্য বা প্রিফেনশিয়াল বাণিজ্য চুক্তি (ব্যাংকক অ্যাগ্রিমেন্ট) স্বাক্ষরিত হয়। প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে ব্যাংকক অ্যাগ্রিমেন্ট পুনর্গঠন করে আপটা স্বাক্ষরিত হয়। আপটা মিনিস্টেরিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে শুল্কসুবিধাসহ চতুর্থ রাউন্ড নেগোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য আগামী ১ জুলাই নির্ধারণ করা হয়।
চতুর্থ মিনিস্টেরিয়াল কাউন্সিল সভায় বিগত প্রায় সাত বছর নেগোসিয়েশনের পর সমঝোতা স্বাক্ষর হয়। সভার সভাপতি বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আপটার সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে অভিনন্দন জানান।
সভায় শ্রীলংকার বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী রিশাদ বাথিউডেন, লাওসের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী খিম্মানি ফলসিনা, দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থ প্রতিমন্ত্রী সেং মোক চোই, চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত নিং ফুকুই, ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ভাগওয়ান্ট সিংবিশনই এবং মঙ্গোলিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রীর পক্ষে থাইল্যান্ডে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত টুগসবিলগুন তুমুর্কহুলেজ নিজেদের দেশের পক্ষে বক্তব্য রাখেন।