নিউজ ডেস্ক:
উত্তর কেনিয়ার একটি আদিবাসী জনগোষ্ঠী তুরকানা। হাজার বছর ধরে তারা নিজেদের ঐতিহ্য আঁকড়ে ধরে রেখেছে। কিন্তু বর্তমানে বদলাচ্ছে তুরকানাদের জীবন ব্যবস্থা। আধুনিক হচ্ছে তুরকানা আদিবাসীরা। ইশারায় পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করা এই মানুষগুলোর হাতে এখন আধুনিক মোবাইল ফোন উঠে গেছে। বিশ্বায়নের কাছে তারা হারাতে বসেছে নিজেদের ঐতিহ্য।
নেইল থমাস বলেন, ‘এ অঞ্চলে সভ্যতার আলো তেমন পৌঁছেনি। তাই বাইরের মানুষের আনাগোনা তেমন নেই। এ জন্যই অঞ্চলটিকে এতো ভালোবাসি আমি।’
কেনিয়ান ফটোগ্রাফার নেইল থমাস দীর্ঘদিন ধরে তুরকানা জনগোষ্ঠীকে নিয়ে গবেষণা করে আসছেন। সম্প্রতি তুরকানাদের এই পরিবর্তন দেখে তিনি খুব হতাশ। তার মতে, তুরকানাদের ঐতিহ্য হারিয়ে গেলে পরবর্তী প্রজন্মকে দেখানোর মত কিছুই থাকবে না। তারা জানবেও না তাদের পূর্ব পুরুষরা কেমন ছিল। আর তাদের জীবনযাপন ব্যবস্থাই বা কেমন ছিল! তাই তিনি তুরকানাদের নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এই প্রামাণ্যচিত্রই পূর্বপুরুষদের স্মৃতি বহন করবে।
বৈঠা হাতে এক তুরকানা যুবক। এক সময় তারা বৈঠা দিয়ে মাছ ধরার নৌকা চালাতেন। আর আজ সেই নৌকা মেশিন দিয়ে চালায়।
উত্তর কেনিয়ায় প্রায় ৯ লাখ তুরকানা জনগোষ্ঠী বাস করে। জীবিকা নির্বাহের জন্য তারা পশুপাখি পালন করেন। পশুর মধ্যে ছাগল, ষাঁড়, উঁট ও গাধা অন্যতম। এসব পশুর মাংস ও দুধই তাদের প্রধান খাবার। আগে পোশাক হিসেবে ব্যবহার করতেন পশুর চামড়া। সম্প্রতি সামান্য আধুনিক কাপড় পরতে শুরু করেছে তারা। পোশাকের ধরন দিন দিন বদলাচ্ছে। তারাও আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মেলাচ্ছে। তুরকানাদের অনেকেই মোবাইল ফোন ব্যবহার শুরু করেছে। হয়তো এভাবেই আধুনিক সভ্যতা তুরকারাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।
ফটোগ্রাফার নেইল থমাস।
নেইল থমাস বলেন, ‘সম্প্রতি আমি তুরকানা জনগোষ্ঠীর সাথে মিলিত হয়েছি। তাদের মধ্যে কিছু মানুষ সামান্য কাপড় পরে আছে। কিন্তু তাদের গলায় একটি করে মোবাইল ফোন ঝুলছে। এটি দেখেই আমি বুঝলাম তাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য এখন বদলাতে চলেছে।’