নিউজ ডেস্ক: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেছেন, আগামী রোববার বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন ইনশাআল্লাহ। তার মুক্তির পর কারোর আপত্তি না শুনে জনসভা করে ধানের শীষে ভোট চাইবেন বেগম খালেদা জিয়া।
আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদ আয়োজিত এক প্রতিবাদী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মওদুদ আহমদ বলেন, বিএনপি প্রমাণ করবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করে নেয়া যায়।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনার যদি মিছিল সমাবেশের সুযোগ না করে দেয় তাহলে বুঝবো, যে আগামী নিবার্চনের আ,লীগের পক্ষ হয়ে সে কাজ করছে।
তিনি বলেন, নিবার্চন কমিশনের দায়িত্ব ৫ বছর হলেও নিবার্চনের আচারন দেখে মনে হয় তফসিল ঘোষণার পরে তার দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন বলে না, আ,লীগ যদি নৌকা প্রতীকের ভোট চাইতে পারে তাহলে বিএনপিও ধানের শীষে ভোট চাইতে পারবে। এতে প্রমাণ হয় নিবার্চন কমিশন তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রতিবাদী সমাবেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বেপারী, বিএনপির নিবার্হী কমিটির সদস্য শিরিন সুলতানা, রফিক সিকদার প্রমুখ বক্তৃতা দেন।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। এই মামলায় অন্য আসামি খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ আরো চারজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
প্রায় ১০ বছর আগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্বে থাকার সময় এই মামলাটি করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন। মামলায় খালেদা জিয়াসহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।
সেখানে অভিযোগ করা হয়, এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে পাওয়া ২ কোটি ১০ লাখ টাকা ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দেয়া হলেও, তা এতিম বা ট্রাস্টের কাজে ব্যয় করা হয়নি। বরং সেই টাকা নিজেদের হিসাবে জমা রাখার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
কিন্তু আসামিপক্ষ থেকে দেখানো হয়েছে বর্তমানে ওই অর্থ ব্যাংকে গচ্ছিত রয়েছে এবং তা সুদে-আসলে বেড়ে ছয় কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের তখনকার উপ সহকারী পরিচালক হারুন-অর রশিদ (বর্তমানে উপ-পরিচালক) এ মামলার এজাহারে খালেদা জিয়াসহ মোট সাতজনকে আসামি করেন।
বাকি ছয়জন হলেন- খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, জিয়াউর রহমানের বোনের ছেলে মমিনুর রহমান, মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক (ইকোনো কামাল), সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ও সৈয়দ আহমেদ ওরফে সায়ীদ আহমেদ।
এ রায়ের বিরুদ্ধে গতকাল বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার দায়ের করা আপিল আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। সেই সাথে তার জামিন আবেদনের শুনানির জন্য আগামী রোববার ২টায় সময় ধার্য করেছেন আদালত।
এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা অর্থদণ্ড স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। সেই সাথে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতের নথি তলব করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।