নিউজ ডেস্ক:
নক্ষত্রপুঞ্জ বলতে কিছু তারার সমাবেশকে বোঝায় যা একটি নির্দিষ্ট আকৃতি ধারণ করে। এ পর্যন্ত নক্ষত্রবিজ্ঞানীরা মহাকাশে মোট ৮৮টি নক্ষত্রপুঞ্জ আলাদা করতে পেরেছেন।
অনেকগুলো তারা মিলে যখন একটি নির্দিষ্ট আকার ধারণ করে এবং তা পৃথিবী থেকে দেখা যায় তাই নক্ষত্রপুঞ্জ। একে ইংরেজিতে Constellation বলা হয়। Constellation শব্দটি ল্যাটিন শব্দ constellstio থেকে এসেছে যার অর্থ তারার সমাবেশ বা নক্ষত্রপুঞ্জ।
আমাদের মহাকাশে মোট ৮৮টি নক্ষত্রপুঞ্জ আছে যাদের বিভিন্ন আকার আছে। এদের মধ্যে ৪২টির আকার বিভিন্ন প্রানীর মতো, ২৯টির আকার বিভিন্ন জড় বস্তুর মতো এবং ১৭টির আকার পৌরাণিক প্রাণীর মতো। কিছু কমন নক্ষত্রপুঞ্জ হল:
ফিনিক্স
ফিনিক্স একটি ছোট নক্ষত্রপুঞ্জ, যার নামকরণ করা হয়েছে রুপকথার পাখির নামে। এটির নামকরণ করেছেন ইয়োহান বেয়ার, যিনি সর্বপ্রথম এটিকে তার ‘১৬০৩ ইউরানোমেট্রিয়ায়’ ফুটিয়ে তুলেছিলেন। এটি দক্ষিণ আকাশে অবস্থিত। এবং এটি সম্ভবত অস্ট্রেলিয়া অথবা সাউথ আফ্রিকা থেকে দেখা যায়। যদিও এটি অন্যান্য নক্ষত্রপুঞ্জ এর তুলনায় কম আলোকিত।
পেগাসাস
পেগাসাস (পক্ষীরাজ ঘোড়া) নক্ষত্রপুঞ্জটি উত্তর আকাশে অবস্থিত। এটি ৮৮টি আবিষ্কৃত নক্ষত্রপুঞ্জের মধ্যে সপ্তম বৃহৎ নক্ষত্রপুঞ্জ। পেগাসাস এর সবথেকে বড় নক্ষত্রটি সূর্যের থেকে প্রায় ১২ গুণ ভারী।
উরসা মেজার
এ নক্ষত্রপুঞ্জটি উত্তরাঞ্চলের স্বর্গীয় গোলার্ধে অবস্থিত এবং টলেমি কর্তৃক দ্বিতীয় শতাব্দীর নক্ষত্রপুঞ্জের তালিকাভুক্ত। উরসা মেজার প্রায় সারা বছর উত্তর গোলার্ধের আকাশে দেখা যায়। উরসা মেজারের সবথেকে দৃশ্যমান প্যাটার্ন বা আকার হল, সাতটি উজ্জ্বল তারা মিলে একটি ভালুকের আকার ধারণ। এটি তৃতীয় বৃহত্তম নক্ষত্রপুঞ্জ যা অনেক গভীর আকাশে অবস্থিত।
অফিউকাস
অফিউকাস তারকাপুঞ্জটি স্বর্গীয় বিষুবরেখার কাছাকাছি অবস্থিত। এর নামটি গ্রিক শব্দ (Ophioukhos) থেকে নেয়া হয়েছে যার অর্থ হল, ‘সর্প-বাহক’। এটি দেখলে মনে হয় একজন মানুষ একটি সাপকে বাহক হিসেবে ব্যবহার করছে। অফিউকাস তারকাপুঞ্জ টলেমির তালিকাভুক্ত ৪৮টি নক্ষত্রপুঞ্জের অংশ ছিল এবং পূর্বে সর্পবাহক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি আকাশগঙ্গার কেন্দ্রে অবস্থিত। সাধারণত গ্রীষ্মকালে বেশি দেখা যায়।
অরিয়ন
অরিয়ন আকাশের বিশিষ্ট নক্ষত্রপুঞ্জগুলোর একটি। এটি বিষুব রেখার উপরে অবস্থিত এবং পৃথিবীর সব জায়গা থেকে এটিকে দেখা যায়। অরিয়ন রাতের আকাশের একটি বিশিষ্ট এবং পরিচিত নক্ষত্রপুঞ্জ। একজন গ্রিক শিকারি ‘অরিয়ন’ এর নাম অনুযায়ী এটির নামকরণ করা হয়েছে। এটি অন্যান্য তারকাপুঞ্জের তুলনায় অনেক বৃহৎ আকৃতির। জানুয়ারি এবং মার্চ মাসের মধ্যে এটিকে সন্ধার সময়ও স্পস্ট দেখা যায়। সমষ্টির সাতটি উজ্জ্বল তারা মিলে আকাশের গায়ে একটি বালুঘড়ির আকৃতি ধারণ করে। এই সাতটি তারা খালি চোখে স্পষ্ট দেখা যায়। এটিই সবথেকে বড় নক্ষত্রপুঞ্জ।